নতুন পোপ নির্বাচিত: ভ্যাটিকানে ‘লিও ১৪’ এর অভিষেক।
ভ্যাটিকান সিটি থেকে: বিশ্বজুড়ে ক্যাথলিক খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের নতুন নেতা নির্বাচিত হয়েছেন রবার্ট প্রিভোস্ট। বৃহস্পতিবার, সেন্ট পিটার্স স্কোয়ারে সমবেত হাজার হাজার মানুষের উল্লাসের মধ্যে তিনি ‘লিও ১৪’ নাম গ্রহণ করেন।
ফরাসি পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুর পর, নতুন পোপ নির্বাচনের জন্য কার্ডিনালদের গোপন বৈঠক (কনক্লেভ) অনুষ্ঠিত হয়।
সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকার কেন্দ্রীয় বারান্দা থেকে পোপ লিও ১৪ তাঁর প্রথম বার্তায় ‘শান্তি’ এবং ‘ঐক্য’-এর ওপর জোর দেন। তিনি প্রয়াত পোপ ফ্রান্সিসের ‘ঈশ্বর আমাদের ভালোবাসেন, ঈশ্বর সবাইকে ভালোবাসেন এবং মন্দ জয়ী হবে না। আমরা ঈশ্বরের হাতে আছি’ – এই কথাগুলোও উল্লেখ করেন।
নতুন পোপের আগমন উপলক্ষে, ইতালি, ডেনমার্কসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আসা ভক্তরা সেন্ট পিটার্স স্কোয়ারে জড়ো হন। তাদের মধ্যে ছিলেন ডেনমার্কের নাগরিক, ২৯ বছর বয়সী কাস্পার মিহালাক।
তিনি বলেন, “আমি খুবই আনন্দিত। কার্ডিনাল প্রিভোস্ট, যিনি এখন লিও ১৪, তিনি তাঁর ভাষণে শান্তির কথা বলেছেন। আমার মনে হয়, বিশ্বের এখন সত্যিই শান্তির খুব প্রয়োজন।”
নতুন পোপের জন্ম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোতে। তিনি পেরুতে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন এবং সেখানকার দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সঙ্গে মিশেছেন। এরপর তিনি পেরুর চিকলায়োর বিশপ হন।
পোপ ফ্রান্সিস ২০২৩ সালে তাঁকে বিশ্বজুড়ে বিশপদের দেখাশোনার দায়িত্ব দেন।
বিশ্লেষকদের মতে, পোপ লিও ১৪ প্রয়াত পোপ ফ্রান্সিসের অন্তর্ভুক্তিমূলক নীতি অনুসরণ করতে পারেন, তবে একই সঙ্গে ভ্যাটিকানের ঐতিহ্যকে সমুন্নত রাখতে সচেষ্ট হবেন। তাঁর নামের সঙ্গে অতীতের যোগসূত্র রয়েছে।
পোপ লিও ১৪-এর নামকরণ, ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রভাবশালী পোপ লিও ১৩-এর প্রতি ইঙ্গিত করে। লিও ১৩ শ্রমিক শ্রেণির অধিকারের পক্ষে সোচ্চার হয়েছিলেন এবং সামাজিক পরিবর্তনের ওপর জোর দিয়েছিলেন।
ভ্যাটিকান মুখপাত্র ম্যাতেও ব্রুনি জানিয়েছেন, নতুন পোপ সম্ভবত প্রযুক্তিগত পরিবর্তনের এই যুগে শ্রমিকদের প্রতি মনোযোগ দিতে চান।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, পোপ লিও ১৪-এর এই পদক্ষেপের মাধ্যমে বিশ্ব ক্যাথলিক চার্চের মধ্যে ঐক্যের বার্তা দেওয়া হয়েছে।
পোপ লিও ১৪-এর নির্বাচন অনেকের কাছেই অপ্রত্যাশিত ছিল। মাত্র তিন দফা ভোটের পরেই তাঁর নাম ঘোষণা করা হয়।
এই বছরের কনক্লেভ ছিল ভ্যাটিকানের ইতিহাসে সবচেয়ে আন্তর্জাতিক। ৭০টিরও বেশি দেশের কার্ডিনালরা এতে অংশ নিয়েছিলেন, যা ক্যাথলিক চার্চের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন মতের প্রতিফলন ঘটায়।
নতুন পোপের প্রথম পদক্ষেপগুলো এখনো স্পষ্ট না হলেও, তাঁর নাম এবং তাঁর অতীতের অভিজ্ঞতা বিশ্বজুড়ে ক্যাথলিক সম্প্রদায়ের জন্য তাৎপর্যপূর্ণ হতে পারে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা।