প্রয়াত এস্তée লাউডার-এর প্রাক্তন সিইও: শোকের ছায়া!

সৌন্দর্যচর্চা জগতের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র, এস্টি লডার কোম্পানির সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) লিওনার্ড লডার আর নেই। ৯২ বছর বয়সে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

শনিবার, ১৫ই জুন পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে তিনি মারা যান। রোববার, ১৬ই জুন এস্টি লডার কোম্পানি এক বিবৃতিতে তাঁর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে।

লিওনার্ড লডার ছিলেন একজন দূরদর্শী নেতা, যিনি শুধু ব্যবসার জগতেই নয়, শিল্পকলা এবং সমাজসেবার ক্ষেত্রেও রেখে গেছেন অসামান্য অবদান। তিনি ছিলেন এস্টি লডার কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা এস্টি ও জোসেফ লর্ডারের বড় ছেলে।

১৯৫৮ সালে তিনি বাবার ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হন এবং দীর্ঘকাল ধরে কোম্পানির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর নেতৃত্বে এস্টি লডার বিশ্বজুড়ে একটি সুপরিচিত ব্র্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে।

তিনি কোম্পানির গবেষণা ও উন্নয়ন (রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট) বিভাগে জোর দেন এবং এর ফলে, বিশ্ববাজারে এস্টি লডারের চাহিদা বাড়ে। তাঁর সময়েই ম্যাক, ববি ব্রাউন এবং অ্যাভেডার মতো জনপ্রিয় প্রসাধনী ব্র্যান্ডগুলো এস্টি লডার কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত হয়।

শুধু ব্যবসা নয়, লিওনার্ড লডার ছিলেন একজন খ্যাতিমান সংগ্রাহক ও সমাজসেবকও। শিল্পকলার প্রতি তাঁর ছিল গভীর অনুরাগ। কিউবিজম ঘরানার (Cubism) শিল্পকর্মের প্রতি তাঁর বিশেষ আকর্ষণ ছিল।

তিনি তাঁর সংগ্রহ থেকে মূল্যবান কিছু চিত্রকর্ম বোস্টনের মিউজিয়াম অফ ফাইন আর্টস এবং নিউইয়র্কের মেট্রোপলিটন মিউজিয়াম অফ আর্ট-এর মতো বিখ্যাত জাদুঘরগুলোতে দান করেছেন।

সমাজসেবার ক্ষেত্রেও তিনি ছিলেন অগ্রগণ্য। আলঝেইমার রোগ (Alzheimer’s disease) এবং স্তন ক্যান্সারের (Breast cancer) বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি ও গবেষণার জন্য তিনি অর্থ ও সহায়তা দিয়েছেন।

তাঁর প্রথম স্ত্রী ইভলিন লডার স্তন ক্যান্সার সচেতনতা বিষয়ক আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। লিওনার্ড এবং ইভলিন দুজনেই নিউইয়র্কের একটি হাসপাতালে স্তন ক্যান্সার বিষয়ক একটি কেন্দ্র স্থাপনে সহায়তা করেন।

এছাড়াও, লিওনার্ড লডার ১৯৯৮ সালে আলঝেইমার রোগ বিষয়ক গবেষণা সমর্থন করার জন্য একটি ফাউন্ডেশনও প্রতিষ্ঠা করেন।

ফোর্বস ম্যাগাজিনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে লিওনার্ড লডারের মোট সম্পদের পরিমাণ ছিল ১০.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১ লক্ষ ১৮ হাজার ৮০০ কোটি টাকার সমান)।

লিওনার্ড লর্ডারের প্রয়াণে তাঁর পরিবারের সদস্যরা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। তাঁর পুত্র উইলিয়াম লডার এক বিবৃতিতে জানান, “তিনি ছিলেন সবচেয়ে বেশি পরোপকারী মানুষ, যিনি বিশ্বাস করতেন শিল্পকলা ও শিক্ষা সবার জন্য, এবং আলঝেইমার ও স্তন ক্যান্সারের মতো রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সবসময় সমর্থন জুগিয়েছেন।”

আরেক পুত্র গ্যারি লডার বলেন, “আমরা তাঁর প্রয়াণে শোকাহত, তবে তাঁর অসাধারণ জীবন, অবদান এবং আমাদের মধ্যে তিনি যে মূল্যবোধগুলো স্থাপন করে গিয়েছেন, সেগুলোর জন্য আমরা গর্বিত।”

লিওনার্ড লডারের জীবন ও কর্ম নিঃসন্দেহে অনেক মানুষের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।

তথ্য সূত্র: পিপল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *