যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগামী মাসে কেনেডি সেন্টার ফর পারফর্মিং আর্টস-এ ‘লেস মিজেরাবল’ নাটকের একটি প্রদর্শনীতে অংশ নিতে যাচ্ছেন। তবে জানা গেছে, ট্রাম্পের এই আগমনকে কেন্দ্র করে নাটকটির কয়েকজন শিল্পী প্রতিবাদস্বরূপ ওই রাতের অনুষ্ঠানে অংশ নাও নিতে পারেন।
সিএনএন-এর একটি সূত্রে এমনটাই জানা গেছে।
সূত্রমতে, আগামী ১১ই জুন ট্রাম্পের ওই অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে। ওই রাতে ‘লেস মিজেরাবল’-এর ১০ থেকে ১২ জন শিল্পী অনুষ্ঠান বর্জনের পরিকল্পনা করছেন।
ট্রাম্পের উপস্থিতির কারণে কোনো শিল্পী যদি ওই রাতে অভিনয় করতে না চান, তবে তাদের সেই সুযোগ দেওয়া হয়েছে। জানা গেছে নাটকের প্রধান শিল্পী এবং অন্যান্য কলাকুশলীরাও এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত হয়েছেন।
এই ঘটনার মাধ্যমে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে কেনেডি সেন্টারের শিল্পী ও কর্মকর্তাদের মধ্যে বিদ্যমান মতবিরোধ আবারও সামনে এসেছে। ট্রাম্প প্রশাসন দীর্ঘদিন ধরেই এই সাংস্কৃতিক কেন্দ্রটির কার্যক্রমে নিজেদের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে।
মূলত, ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের কারণেই অনেক শিল্পী ও কলাকুশলী তাঁদের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন অথবা তাদের পূর্বনির্ধারিত অনুষ্ঠান বাতিল করতে বাধ্য হয়েছেন।
ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকেই কেনেডি সেন্টারের ওপর নিজের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে উঠেপড়ে লেগেছেন। তিনি নিজেই সেখানকার চেয়ারম্যান পদে আসীন হয়েছেন এবং তাঁর পছন্দের কয়েকজনকে গুরুত্বপূর্ণ পদে বসিয়েছেন।
এমনকি, তিনি প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা রিচার্ড গ্রেনেলকে পরিচালক হিসেবেও নিয়োগ করেছেন।
জানা গেছে, ট্রাম্প ওই রাতে কেনেডি সেন্টারে একটি তহবিল সংগ্রহেরও পরিকল্পনা করেছেন। এই প্রসঙ্গে সংশ্লিষ্ট একজন ব্যক্তি সিএনএন-কে জানান, “আমরা ‘লেস মিজেরাবল’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানকে কেন্দ্রের আর্থিক অবস্থার উন্নতির সুযোগ হিসেবে দেখছি।”
আর্টিস্ট এবং সংস্কৃতি জগতের মানুষের মধ্যে ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। ইতিমধ্যেই অনেক শিল্পী কেনেডি সেন্টার থেকে তাদের নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছেন বা তাদের অনুষ্ঠান বাতিল করেছেন।
এদের মধ্যে ইসা রে, শন্ডা রাইমস এবং বেন ফোল্ডসের মতো পরিচিত ব্যক্তিত্বও রয়েছেন। এমনকি, জনপ্রিয় ব্রডওয়ে শো ‘হ্যামিলটন’ও ট্রাম্পের এই পদক্ষেপের কারণে কেনেডি সেন্টারে তাদের অনুষ্ঠান বাতিল করেছে।
ট্রাম্প প্রায়ই কেনেডি সেন্টারের অবস্থা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। এছাড়াও, তিনি বিভিন্ন সময়ে এই ধরনের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের বিরোধিতা করেছেন।
এই ঘটনার মাধ্যমে শিল্প ও সংস্কৃতির উপর রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের একটি নতুন চিত্র ফুটে উঠেছে, যা শিল্পী মহলে গভীর উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন