বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনে বাজিমাৎ করা আফ্রিকার তরুণ স্প্রিন্টার লেতসিলে তেবোগো। দৌড়ের ট্র্যাকে তার অসাধারণ সাফল্যের গল্প এখন সবার মুখে মুখে।
সম্প্রতি কাতারের দোহা ডায়মন্ড লিগে ২০০ মিটার দৌড়ে তিনি জয়লাভ করেছেন। এর আগে প্যারিস অলিম্পিকে স্বর্ণপদক জয় করে ইতিহাস গড়েছিলেন বতসোয়ানার এই দৌড়বিদ।
ছোটবেলায় ফুটবলার হতে চাওয়া তেবোগোকে শিক্ষক-শিক্ষিকারা অ্যাথলেটিক্সে আসার জন্য উৎসাহিত করেন। তাদের অনুপ্রেরণায়, কয়েক বছর পরেই তিনি প্রমাণ করেন, ইচ্ছাশক্তি থাকলে যেকোনো কিছুই জয় করা সম্ভব।
প্যারিস অলিম্পিকে তিনি যখন ১৯.৪৬ সেকেন্ড সময় নিয়ে দৌড় শেষ করেন, তখন সবাই অবাক হয়ে গিয়েছিল। কারণ, তার সামনে ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের নামকরা স্প্রিন্টাররা, যাদের মধ্যে ১০০ মিটার দৌড়ের স্বর্ণপদক জয়ী নোয়া লাইলসও ছিলেন।
তেবোগোর এই সাফল্যে শুধু তার দেশেই নয়, সারা আফ্রিকা মহাদেশে আনন্দের ঢেউ লেগেছে। কারণ, তিনিই প্রথম আফ্রিকান যিনি অলিম্পিকে ২০০ মিটার দৌড়ে স্বর্ণপদক জিতেছেন।
খেলাধুলায় আফ্রিকার দেশগুলো সাধারণত দূরপাল্লার দৌড়ে বেশি সাফল্য পায়। তবে তেবোগোর এই জয় স্প্রিন্টিংয়েও তাদের সম্ভাবনা জাগিয়ে তুলেছে।
দোহা ডায়মন্ড লিগে জয়ের পর তেবোগো বলেন, অলিম্পিক জয়ের পর তার জীবন অনেক বদলে গেছে। বিভিন্ন ব্র্যান্ড এখন তার সঙ্গে যুক্ত হতে চাইছে, কারণ তার জনপ্রিয়তা বেড়েছে।
তিনি আরও বলেন, তরুণ অ্যাথলেটদের জন্য তিনি একটি উদাহরণ তৈরি করতে পেরেছেন, এতেই তিনি সবচেয়ে বেশি খুশি। কঠিন পরিশ্রম ও সঠিক পথে থাকলে যে কেউ তার স্বপ্ন পূরণ করতে পারে, এই বার্তা তিনি দিতে চান।
আফ্রিকার স্প্রিন্টিংয়ের ভবিষ্যৎ নিয়েও তেবোগো বেশ আশাবাদী। তিনি মনে করেন, আফ্রিকার অ্যাথলেটরা এখন বিশ্ব মঞ্চে ভালো করছে এবং ভবিষ্যতে আরও ভালো করবে।
তিনি এমন একটি দিনের স্বপ্ন দেখেন, যেদিন অলিম্পিকে শুধুমাত্র আফ্রিকান দৌড়বিদদের আধিপত্য থাকবে।
আফ্রিকার ক্রীড়াঙ্গনে, বিশেষ করে স্প্রিন্টিংয়ে, অবকাঠামো এবং সুযোগ-সুবিধার অভাব এখনো একটি বড় সমস্যা। তবে তেবোগো মনে করেন, আফ্রিকার সরকারগুলো যদি ক্রীড়াবিদদের দিকে আরও বেশি মনোযোগ দেয়, তাহলে এই অবস্থার পরিবর্তন হতে পারে।
তার মতে, বতসোয়ানার নতুন সরকার যদি অ্যাথলেটদের পাশে দাঁড়ায়, তাহলে দেশের ক্রীড়াঙ্গন আরও উন্নত হবে এবং আরও অনেক তেবোগোর জন্ম হবে।
তেবোগো শুধু একজন ক্রীড়াবিদ নন, তিনি এখন আফ্রিকার তরুণ প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণা। তার সাফল্যে সেখানকার অনেক খেলোয়াড় আত্মবিশ্বাস ফিরে পেয়েছেন এবং নিজেদের প্রতিভা প্রদর্শনের জন্য এগিয়ে আসছেন।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা