অস্ট্রেলিয়ার রাজনৈতিক অঙ্গনে বড় ধরণের পরিবর্তনের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে দেশটির প্রধান রাজনৈতিক দল, লিবারেল পার্টি’র পরাজয়ের পর দলটির ভবিষ্যৎ নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা ও বিশ্লেষণ।
দলের প্রবীণ নেতারা মনে করছেন, ভোটারদের সঙ্গে পুনরায় সংযোগ স্থাপন করতে না পারলে দলটির ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন হবে।
নির্বাচনের ফলাফলের পর, দলের মধ্যে নীতি নির্ধারণ ও ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নিয়ে বিভেদ দেখা দিয়েছে। কেউ কেউ চাইছেন উদারনৈতিক নীতির দিকে ফিরে যেতে, আবার কারো মতে দলের রক্ষণশীল অবস্থান আরও জোরদার করা উচিত।
সাবেক অর্থমন্ত্রী ও দলের শীর্ষস্থানীয় নেতা সাইমন বার্মিংহাম মনে করেন, উদার ও রক্ষণশীল চিন্তাধারার সমন্বয় বর্তমানে খুবই প্রয়োজন। তিনি নারী ভোটারদের আকৃষ্ট করতে দলে কোটা পদ্ধতি চালুরও আহ্বান জানিয়েছেন।
অন্যদিকে, দলের কট্টরপন্থী অংশের নেতারা মনে করছেন, দল যথেষ্ট রক্ষণশীল নীতি গ্রহণ করেনি। তাদের মতে, ভোটারদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা অর্জনের জন্য দলের আরও ডানপন্থী হওয়া দরকার।
নির্বাচনে পরাজয়ের কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে দলটির নেতারা বিভিন্ন দিক তুলে ধরছেন। অনেকে মনে করছেন, দলের কৌশলগত দুর্বলতা এবং প্রচারণার ব্যবস্থাপনায় ত্রুটি ছিল।
কারো কারো মতে, আদিবাসী জনগোষ্ঠীর অধিকার বিষয়ক একটি বিতর্কিত ইস্যুতে দলের অবস্থান ভুল ছিল। এছাড়া, দলের অভ্যন্তরে নেতৃত্বের দুর্বলতা নিয়েও অনেকে সমালোচনা করছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, লিবারেল পার্টিকে ঘুরে দাঁড়াতে হলে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে নীতিমালার পুনর্বিবেচনা, নতুন নেতৃত্বের নির্বাচন এবং ভোটারদের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করা।
দলের প্রাক্তন সংসদ সদস্য ডেভ শর্মা মনে করেন, জনগণের কাছে একটি ভালো সরকার হিসেবে নিজেদের প্রমাণ করতে ব্যর্থ হওয়ায় দলটি এই পরাজয় বরণ করেছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, লিবারেল পার্টির জন্য এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো জনগণের আস্থা অর্জন করা। তাঁদেরকে একটি সুস্পষ্ট পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে এবং দেখাতে হবে যে তাঁরা দেশ পরিচালনায় প্রস্তুত।
দলটির ভবিষ্যৎ নিয়ে অভ্যন্তরীণ আলোচনা এখনো চলছে। অনেকেই মনে করছেন, জনমতকে গুরুত্ব দিয়ে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক কর্মসূচি গ্রহণ করা উচিত। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং সামাজিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে পারলে, দলের ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা বাড়বে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান