ত্রিপোলিতে সংঘর্ষ: জাতিসংঘের সতর্কবার্তা, কী ঘটতে যাচ্ছে?

যুদ্ধবিধ্বস্ত লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপলিতে আবারও সংঘর্ষ শুরু হয়েছে, যা আন্তর্জাতিক মহলে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। জাতিসংঘের পক্ষ থেকে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানো হয়েছে এবং বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষার জন্য নিরাপদ করিডোর তৈরির কথা বলা হয়েছে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হলে তা আন্তর্জাতিক আইনের গুরুতর লঙ্ঘন হিসেবে বিবেচিত হবে বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়েছে।

জানা গেছে, ত্রিপলির গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে, বিশেষ করে বন্দরের আশেপাশে, prime minister আব্দুল হামিদ আল-দবাইবাহ্‌র প্রতি অনুগত ৪৪৪ ব্রিগেডের সঙ্গে র‍্যাডা মিলিশিয়ার মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, উভয় পক্ষের মধ্যে হালকা ও মাঝারি অস্ত্রের ব্যবহার হয়েছে এবং আবাসিক এলাকাগুলোতেও এর প্রভাব পড়েছে।

এই সংঘর্ষকে প্রত্যক্ষদর্শীরা ‘শহুরে যুদ্ধ’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

সোমবার রাতে আবু সালিমের দক্ষিণাঞ্চলে আধিপত্য বিস্তারকারী মিলিশিয়া ‘সাপোর্ট অ্যান্ড স্ট্যাবিলিটি অ্যাপারেটাস’-এর প্রধান আবদুলগানি আল-কিকলির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পরই মূলত এই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। সোমবারের লড়াইয়ে অন্তত ছয়জন নিহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

মঙ্গলবার সকালে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত ছিল, কিন্তু রাতের বেলা আবারও ব্যাপক সংঘর্ষ শুরু হয়।

সংঘর্ষের কারণে সেখানকার সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে পরিবারগুলো চরম আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।

এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, “গোলাগুলির হাত থেকে বাঁচতে পরিবারের সদস্যদের একটি কক্ষে আশ্রয় নিতে হয়েছে।”

২০১১ সালে দীর্ঘদিনের শাসক মুয়াম্মার গাদ্দাফির পতনের পর থেকেই লিবিয়া রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে রয়েছে। ২০১৪ সালে দেশটি জাতিসংঘ স্বীকৃত সরকার ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীর মধ্যে বিভক্ত হয়ে যায়।

বর্তমানে ত্রিপলিতে আল-দবাইবাহ্‌র নেতৃত্বে একটি সরকার এবং পূর্বাঞ্চলে খলিফা হাফতারের নেতৃত্বে আরেকটি প্রশাসন সক্রিয় রয়েছে।

জাতিসংঘের মিশন সেখানকার পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং উভয় পক্ষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানাচ্ছে। একইসঙ্গে, তারা বেসামরিক নাগরিকদের জীবন রক্ষার জন্য জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার উপর জোর দিয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে, ত্রিপলিতে শান্তি ফিরিয়ে আনা এবং সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক করাই এখন প্রধান চ্যালেঞ্জ।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *