৯ জনের ডিনার টেবিলে সাবেক প্রেমিকদের নিয়ে হাজির নারী!

বাংলার সাহিত্য জগতে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র, যিনি তাঁর ব্যতিক্রমী কাজের মাধ্যমে পরিচিতি লাভ করেছেন, তিনি হলেন লিন্ডা রোজেনক্রাঞ্জ। বর্তমানে নব্বই বছর বয়সী এই মার্কিন লেখিকা একাধারে শিল্পী এবং শিল্পীসত্তার অনুসন্ধানী।

ষাটের দশকে নিউ ইয়র্কের শিল্পী মহলে তাঁর অবাধ বিচরণ ছিল, আর সেই সময়ের avant-garde ধারার সঙ্গে তাঁর কাজের গভীর সম্পর্ক ছিল। রোজেনক্রাঞ্জ-এর জীবন ও কর্ম আজও শিল্পী এবং সাহিত্যপ্রেমীদের কাছে আলোচনার বিষয়।

ব্রঙ্কস-এ জন্ম নেওয়া লিন্ডা রোজেনক্রাঞ্জ-এর শৈশব কাটে ১৯৩০-এর দশকে। পড়াশোনা শেষে তিনি ম্যানহাটনে পাড়ি জমান এবং সেখানে একটি নিলাম সংস্থার পাবলিসিটি ও সম্পাদনা বিভাগে কাজ শুরু করেন।

এই সূত্রেই তাঁর পরিচয় হয় পিটার হুজারের মতো খ্যাতনামা শিল্পীদের সঙ্গে। হুজারের সঙ্গে তাঁর গভীর বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে, যা তাঁদের জীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল।

হুজারের তোলা ছবিতে রোজেনক্রাঞ্জ-কে প্রায়ই দেখা যেত, যা তাঁদের বন্ধুত্বের গভীরতা প্রমাণ করে।

রোজেনক্রাঞ্জের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো ১৯৬৮ সালে প্রকাশিত তাঁর উপন্যাস ‘টক’। কথোপকথন নির্ভর এই উপন্যাসটি সে সময়ের মানুষের জীবনযাত্রা, বিশেষ করে যৌনতা, মাদক এবং মনোবিশ্লেষণ নিয়ে লেখা।

দীর্ঘদিন ধরে বন্ধুদের সঙ্গে কথোপকথন রেকর্ড করে, তা থেকে ১৫০০ পৃষ্ঠার একটি পাণ্ডুলিপি তৈরি করেন তিনি। পরবর্তীতে সেই বিশাল পাণ্ডুলিপি থেকে গল্প তৈরি করে, যা সাহিত্য জগতে আলোড়ন সৃষ্টি করে।

এই কাজটি সে সময়ে বেশ সমালোচিত হলেও, পরবর্তীকালে এর গভীরতা ও নতুনত্বকে সকলে স্বীকৃতি দিয়েছে।

‘টক’-এর সাফল্যের পর রোজেনক্রাঞ্জ আরও কিছু পরীক্ষামূলক কাজ করেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, প্রাক্তন প্রেমিকদের সঙ্গে ডিনার করে তাঁদের কথোপকথন রেকর্ড করা।

এই কাজটি একদিকে যেমন কৌতুকপূর্ণ ছিল, তেমনই সম্পর্কের ভিন্ন দিক উন্মোচন করেছে।

লেখিকা হিসেবে পরিচিতি পাওয়ার পরে, রোজেনক্রাঞ্জ বেবি নেমিং বা শিশুদের নামকরণের ওপর বই লেখা শুরু করেন। এই ধরনের বই লেখার ধারণা তাঁর আগে কেউ দেননি।

তাঁর লেখা ‘বিয়ন্ড জেনিফার অ্যান্ড জেসন’ ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। এই বইগুলো সামাজিক প্রেক্ষাপটে নামের গুরুত্ব তুলে ধরে, যা সংস্কৃতিতে গভীর প্রভাব ফেলেছিল।

লিন্ডা রোজেনক্রাঞ্জের জীবন এবং কাজ নিয়ে বর্তমানে নতুন করে আগ্রহ তৈরি হয়েছে। তাঁর বন্ধু পিটার হুজারের জীবন নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্র ‘পিটার হুজার্স ডে’ মুক্তি পেতে চলেছে, যেখানে রেবেকা হল রোজেনক্রাঞ্জের চরিত্রে অভিনয় করেছেন।

এই চলচ্চিত্রটি রোজেনক্রাঞ্জের জীবন ও কাজের প্রতি দর্শকদের আগ্রহ আরও বাড়িয়ে তুলবে বলে আশা করা যায়।

নব্বই বছর বয়সেও লিন্ডা রোজেনক্রাঞ্জ নতুন কিছু করার চেষ্টা করছেন। তাঁর কাজগুলো সময়ের চেয়ে এগিয়ে ছিল বলেই মনে করা হয়।

বর্তমানে তিনি তাঁর পুরনো ডায়েরিগুলো নতুন করে সাজাচ্ছেন এবং সেই কাজগুলো থেকে নতুন কিছু তৈরি করার পরিকল্পনা করছেন। তাঁর জীবন, কাজ এবং সৃষ্টিশীলতার এই ধারা আজও অনেকের কাছে অনুপ্রেরণা যোগায়।

তথ্য সূত্র: The Guardian

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *