শিরোনাম: কঠিন সময়ে লিন্ডসে বারো: স্বামীর স্মৃতি ও এমএনডি-র বিরুদ্ধে লড়াই।
ইংল্যান্ডের রাগবি তারকা রব বারোর মৃত্যুর পর, তাঁর স্ত্রী লিন্ডসে বারো-এর জীবন এখন সম্পূর্ণ অন্য পথে। স্বামীর স্মৃতি বুকে নিয়ে তিনি মরণব্যাধি মোটর নিউরোন রোগ (এমএনডি) সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে এবং এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেমেছেন। আগামী দিনে তিনি লন্ডন ও লিডস ম্যারাথনে দৌড়াবেন, যা শুধু শারীরিক সক্ষমতার পরীক্ষা নয়, বরং এমএনডি-র বিরুদ্ধে এক শক্তিশালী প্রতিবাদের নাম।
রব বারো ছিলেন লিডস রাইনোসের কিংবদন্তি খেলোয়াড়। মাঠে তাঁর ক্ষিপ্রতা ও লড়াই করার মানসিকতা ছিল অসাধারণ। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে, তিনি এমএনডি-তে আক্রান্ত হন এবং মাত্র ৪১ বছর বয়সে এই রোগের কাছে হার মানেন। এই কঠিন সময়ে লিন্ডসে তাঁর পাশে ছিলেন সবসময়, সাহস জুগিয়েছেন। লিন্ডসে একজন ফিজিওথেরাপিস্ট, তাই এমএনডি-র ভয়াবহতা তিনি ভালোভাবেই জানতেন। স্বামীর অসুস্থতা তাঁকে কতটা কষ্ট দিয়েছে, তা ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন।
“আমার মনে আছে, যখন জানতে পারি রব-এর এমএনডি হয়েছে, তখন যেন পুরো পৃথিবীটা ভেঙে গিয়েছিল,” – বলছিলেন লিন্ডসে। “কিন্তু রবের লড়াই করার মানসিকতা আমাকে শক্তি জুগিয়েছে। ও সবসময় হাসিখুশি থাকতে চেষ্টা করত, যা আমাকেও কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে শিখিয়েছে।”
লিন্ডসের কথায়, খেলাধুলা রবের জীবনে কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল তা বোঝা যায়। রব ছোটবেলা থেকেই রাগবি খেলতে ভালোবাসতেন। খেলার মাঠে তিনি ছিলেন লড়াকু, প্রতিপক্ষের থেকে নিজেকে আলাদা প্রমাণ করতে সবসময় প্রস্তুত। লিন্ডসের মতে, রাগবি খেলার কারণে হয়তো রবের শরীরে আঘাত লেগেছিল, যা এই রোগের কারণ হতে পারে। যদিও বিষয়টি এখনো গবেষণার বিষয়।
স্বামীকে হারানোর পর লিন্ডসে একা হয়ে গেলেও, তিনি ভেঙে পড়েননি। বরং, এমএনডি সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে এবং এই রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অর্থ সংগ্রহের জন্য ম্যারাথনে অংশ নিচ্ছেন। তাঁর এই উদ্যোগ অনেকের কাছে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। লিন্ডসে বলেন, “আমি জানি, এই পথটা সহজ নয়। কিন্তু রবের স্মৃতি এবং এমএনডি আক্রান্তদের জন্য কিছু করতে পারার ইচ্ছাই আমাকে সাহস যোগায়।”
রব বারোর মৃত্যুর পর, তাঁর পরিবার ও বন্ধুদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে। তবে শোককে শক্তিতে পরিণত করে লিন্ডসে এখন এমএনডি-র বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এক যোদ্ধা। তিনি চান, মানুষ এই রোগ সম্পর্কে আরও বেশি জানুক এবং আক্রান্তদের পাশে এসে দাঁড়াক। লিন্ডসের এই লড়াই নিশ্চয়ই অনেকের কাছে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
তথ্যসূত্র: আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম।