চল্লিশ বছর বয়সী মার্কিন স্কিয়ার লিন্ডসে ভন আবারও প্রমাণ করেছেন, বয়স কেবল একটা সংখ্যা মাত্র। দীর্ঘ অবসর ভেঙে ফিরে এসে তিনি বিশ্ব স্কি প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছেন।
এই সাফল্যের মাধ্যমে তিনি শুধু নিজের সমালোচকদেরই ভুল প্রমাণ করেননি, বরং দেখিয়েছেন ইচ্ছাশক্তি ও কঠোর পরিশ্রমে বাধা ডিঙানো সম্ভব।
২০১৯ সালে স্কি থেকে অবসর নিয়েছিলেন ভন। কিন্তু খেলাটির প্রতি ভালোবাসাই ছিল তাঁর আসল চালিকাশক্তি।
অবশেষে, হাঁটু প্রতিস্থাপনের সফল অস্ত্রোপচারের পর, তিনি আবার ফিরতে প্রস্তুত হন। বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনে তাঁর প্রত্যাবর্তনের ঘটনা অনেকের কাছেই ছিল অভাবনীয়।
মাদ্রিদে লরিয়াস ওয়ার্ল্ড স্পোর্টস অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “আমি নিজেও ভাবিনি যে আবার এই পর্যায়ে ফিরতে পারব।”
মার্চ মাসে অনুষ্ঠিত বিশ্ব কাপের ফাইনালসে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে ভন ইতিহাস গড়েছেন। তিনি প্রমাণ করেছেন, খেলাধুলা ও সাফল্যের পথে বয়স কোনো বাধা নয়।
এই সাফল্যের পর তিনি বলেন, “আমি কেঁদেছিলাম। সম্ভবত কোনো প্রতিযোগিতার পর এত কাঁদিনি। কারণ এটা আমার জন্য অনেক বড় একটা মুহূর্ত ছিল।”
এই সাফল্যের অনুভূতি তিনি অলিম্পিক পদকের মতোই মূল্যবান বলে মনে করেন।
ফিরে আসার পথে অনেক প্রতিকূলতা মোকাবেলা করতে হয়েছে তাঁকে। নতুন সরঞ্জাম, কোচ এবং প্রশিক্ষকদের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া, আগের চেয়ে ২০ পাউন্ড ওজন কমানো, এসব ছিল কঠিন চ্যালেঞ্জ।
এমনকী মাঝে মাঝে মনে হয়েছে, এই পথ যেন পাড়ি দেওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু স্কি ভালোবাসার কারণেই তিনি হাল ছাড়েননি।
ভনের অভিজ্ঞতা এবং ট্র্যাক সম্পর্কে গভীর জ্ঞান তাকে তরুণ প্রতিযোগীদের সঙ্গে লড়াইয়ে সাহায্য করেছে। যদিও শুরুতে তিনি কাউকে কিছু প্রমাণ করতে চাননি, কিন্তু সমালোচকদের নেতিবাচক মন্তব্যের কারণে তাঁর মানসিক পরিবর্তন হয়।
তিনি বলেন, “আমি চেয়েছিলাম প্রমাণ করতে যে, আমরা নারীরা বয়সের কাছে পরাজিত নই। আমরা আমাদের সামর্থ্য এবং কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে নিজেদের প্রমাণ করতে পারি।”
ভন আরও বলেন, সাত বছর বয়স থেকে স্কি তাঁর জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। স্কিইং করতে পারাটাই তাঁর কাছে সবচেয়ে আনন্দের।
তাঁর এই প্রত্যাবর্তন শুধু একজন ক্রীড়াবিদের প্রত্যাবর্তন নয়, বরং সকল নারীর জন্য এক অনুপ্রেরণা, যারা বয়সকে অগ্রগতির পথে বাধা হিসেবে দেখেন।
তাঁর লক্ষ্য এখন আগামী অলিম্পিকে অংশগ্রহণ করা।
তথ্য সূত্র: সিএনএন