আর্মস্ট্রংয়ের পতনেও ‘লিভস্ট্রং’ ব্যান্ড: কিভাবে?

সারা বিশ্বে একসময় ল্যান্স আর্মস্ট্রংয়ের নাম ছিল সাফল্যের প্রতিশব্দ। ক্যান্সারের বিরুদ্ধে জয়ী হয়ে ফিরে আসা এই সাইক্লিস্ট যেন এক জীবন্ত কিংবদন্তী। তাঁর হলুদ ‘লাইভস্ট্রং’ (Livestrong) রিস্টব্যান্ড পরে কোটি কোটি মানুষ, তাঁর ভক্তকূলের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছিল।

কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় সেই সাফল্যের মুকুট খসে পরে, বেরিয়ে আসে এক ভিন্ন সত্য।

আর্মস্ট্রংয়ের উত্থান ছিল চমকপ্রদ। ২৫ বছর বয়সে টেস্টিকুলার ক্যান্সারকে জয় করে তিনি ফিরে আসেন খেলার ময়দানে। এরপর সাইক্লিংয়ে একের পর এক জয়, টানা সাতটি ‘ট্যুর ডি ফ্রান্স’ খেতাব জয় করে বিশ্বজুড়ে পরিচিতি পান।

তাঁর এই সাফল্যের পেছনে ছিল নাইকির মতো কর্পোরেট স্পনসরদের সমর্থন। খেলোয়াড় হিসেবে তাঁর আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব, দৃঢ়চেতা মানসিকতা এবং ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের গল্প মানুষকে আকৃষ্ট করেছিল। ‘লাইভস্ট্রং’ ছিলো তাঁর ক্যান্সার ফাউন্ডেশনের প্রতীক, যা তাঁর এই সাফল্যের সঙ্গে মিশে গিয়েছিল।

কিন্তু সাফল্যের এই উজ্জ্বল চিত্রটির অন্য একটি দিক ছিল। ল্যান্স আর্মস্ট্রংয়ের বিরুদ্ধে ডোপিংয়ের অভিযোগ ওঠে, যা তাঁর সম্মান ও খ্যাতি কেড়ে নেয়।

তাঁর দলের সতীর্থ, সাংবাদিক এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা, যারা আর্মস্ট্রংয়ের বিরুদ্ধে কথা বলেছিলেন, তাঁদের ওপর নেমে আসে প্রতিশোধ। অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় তাঁর জয় করা সাতটি ‘ট্যুর ডি ফ্রান্স’ খেতাব কেড়ে নেওয়া হয়।

খেলা থেকে নির্বাসিত হন তিনি, হারান স্পনসরদের সমর্থন।

তবে, এই ঘটনার পরেও ‘লাইভস্ট্রং’ ফাউন্ডেশন টিকে ছিল।

২০১২ সালে ফাউন্ডেশনটি আর্মস্ট্রংয়ের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে, তবে ক্যান্সার রোগীদের সাহায্য করার উদ্দেশ্যে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যায়।

ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী সুজান স্টোন (Suzanne Stone) সে সময় বলেছিলেন, “আর্মস্ট্রং বাইকটা নিলেন, আর আমরা বাড়িটা নিজেদের কাছে রাখলাম।”

ল্যান্স আর্মস্ট্রংয়ের গল্প শুধু একজন ক্রীড়াবিদের প্রতারণার গল্প নয়। এটি একজন চ্যাম্পিয়নের চরিত্র এবং তাঁকে সমর্থনকারী ব্যবস্থার দায়বদ্ধতা নিয়েও প্রশ্ন তোলে।

খেলাধুলা এবং সমাজের বিভিন্ন স্তরে নৈতিকতার গুরুত্ব এই গল্পের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক।

তথ্য সূত্র: CNN

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *