লিজোর স্বাস্থ্য পরিবর্তনের গোপন খবর! কিভাবে এল এই পরিবর্তন?

বিখ্যাত শিল্পী লিজো, যিনি তাঁর গান এবং শরীরের প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির জন্য বিশ্বজুড়ে পরিচিত, সম্প্রতি তাঁর স্বাস্থ্য এবং সুস্থ জীবনযাত্রার দিকে মনোনিবেশ করেছেন। ওজন কমানোর বদলে তিনি একটি সামগ্রিক স্বাস্থ্যকর জীবনধারার দিকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন, যা “ওজন মুক্তি যাত্রা” হিসাবে বর্ণনা করেছেন।

এই যাত্রাপথে লিজো কীভাবে নিজের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাচ্ছেন, সেই গল্পই আজ আমরা জানব।

২০২৩ সাল থেকে লিজো সামাজিক মাধ্যম এবং বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে তাঁর এই নতুন যাত্রার কথা বলেছেন। তিনি সবসময় তরুণ ভক্তদের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে এমন কোনো শব্দ ব্যবহার করা থেকে বিরত থেকেছেন।

লিজোর মূল লক্ষ্য ছিল মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করা। তিনি মনে করেন, শরীর পরিবর্তনের চেয়ে মনের পরিবর্তন বেশি জরুরি।

শরীর তো সময়ের সাথে সাথে বদলাবেই, এটাই স্বাভাবিক।

২০২৫ সালের জানুয়ারিতে, লিজো তাঁর প্রাথমিক “ওজন মুক্তি” লক্ষ্য অর্জন করেছেন এবং নতুন লক্ষ্য নির্ধারণের জন্য প্রস্তুত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন। এই যাত্রায় তিনি কিভাবে ওজন কমিয়েছেন, আসুন সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানি।

লিজো তাঁর এই যাত্রা শুরু করেন ২০২৩ সালে। একটি সাক্ষাৎকারে তিনি জানান যে এই “ইচ্ছাকৃত ওজন মুক্তি যাত্রা” প্রায় দেড় বছর ধরে চলছে।

শরীরচর্চার প্রতি তাঁর ভালোবাসা আগে থেকেই ছিল, তবে এখন তিনি তাঁর পেশাগত জীবনের শারীরিক চাহিদার দিকে আরও বেশি মনোযোগ দিচ্ছেন। তিনি মনে করেন, যারা মোটা হন, তাঁদের সম্পর্কে অনেকেই আগে থেকেই একটা ধারণা করে নেন যে তাঁরা হয়তো ওজন কমানোর চেষ্টা করছেন।

লিজো কখনোই রোগা হতে চান না। তাঁর মতে, শরীরের আকার পরিবর্তন হতেই পারে, এবং তিনি এতে অভ্যস্ত।

এই সময়ে, লিজোর ওজন কমানোর প্রক্রিয়া নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলেছিলেন, বিশেষ করে তিনি ওজন কমানোর জন্য “ওজেম্পিক” (Ozempic) নামের কোনো ওষুধ ব্যবহার করছেন কিনা, যা ওজন কমানোর জন্য হলিউডেও বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে।

লিজো অবশ্য মজা করে এই অভিযোগের জবাব দিয়েছিলেন।

লিজো তাঁর ওজন কমানোর প্রক্রিয়াকে দ্রুতগতির কোনো সমাধান হিসেবে দেখেননি। তিনি ধীরে ধীরে এবং সুপরিকল্পিতভাবে এই কাজ করেছেন।

একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, তাঁর শরীর ধীরে ধীরে পরিবর্তিত হচ্ছে, তবে সম্ভবত সবাই সেদিকে মনোযোগ দেননি। তিনি নিয়মিত শরীরচর্চা এবং খাদ্যগ্রহণের ধরন পরিবর্তন করেছেন।

শারীরিক পরিবর্তনগুলো তাঁর যাত্রার একটি অংশ। লিজো মনে করেন, শরীরের প্রতি ইতিবাচক ধারণা সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তিত হয়। তিনি সব সময় তাঁর শরীরকে ভালোবাসেন না, তবে তিনি তাঁর শরীরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।

স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের জন্য লিজো ব্যায়ামাগারে যাওয়া শুরু করেন। তিনি তাঁর পিঠের “আরোগ্য”-এর জন্য বিশেষ ব্যায়াম করেন।

এছাড়াও, তিনি শক্তি-প্রশিক্ষণ, লম্বা হাঁটা এবং দড়ি লাফের মতো বিভিন্ন ব্যায়াম করেন। লিজো প্রতিদিন শরীরচর্চা করার চেষ্টা করেন।

জানুয়ারী ২০২৫-এ লিজো তাঁর স্বাস্থ্য লক্ষ্য অর্জন করেন। তিনি তাঁর একটি ছবিতে তাঁর শরীরের সূচক দেখিয়েছেন, যেখানে দেখা যাচ্ছে তিনি তাঁর শরীরের চর্বি ১৬ শতাংশ কমিয়েছেন।

লিজো “ওজন কমানো” শব্দটির পরিবর্তে “ওজন মুক্তি” শব্দটি ব্যবহার করতে পছন্দ করেন। তাঁর প্রেমিক মাইক রাইট (Myke Wright) তাঁকে এই বিষয়ে উৎসাহিত করেছেন।

লিজো মনে করেন, তিনি কোনো কিছু হারাতে চান না, বরং জিততে চান, অর্থাৎ সুস্থ জীবনযাপন করতে চান। তিনি তাঁর তরুণ ভক্তদের উপর কোনো নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে চান না, তাই শরীরের পরিবর্তন নিয়ে কথা বলার সময় খুব সচেতন থাকেন।

তিনি চান, তাঁর এই যাত্রা অন্যদেরও স্বাচ্ছন্দ্য দিক এবং তাঁদের মধ্যে ভীতি কমাতে সাহায্য করুক।

লিজোর এই “ওজন মুক্তি যাত্রা” আমাদের দেখায় যে, স্বাস্থ্যকর জীবন কেবল ওজন কমানোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়।

এটি মানসিক স্বাস্থ্য, শারীরিক সুস্থতা এবং শরীরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার একটি সমন্বিত প্রক্রিয়া।

তথ্য সূত্র: পিপল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *