ঢাকার মত বিশ্বের অনেক শহরেই এখন বাড়ি ভাড়ার আকাশছোঁয়া দাম নিয়ে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে।
এই পরিস্থিতিতে, যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে একটি অভিনব সমাধান খুঁজে বের করা হয়েছে – ‘প্রপার্টি গার্ডিয়ানশিপ’ বা সম্পত্তি তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা।
এই পদ্ধতিতে, ফাঁকা পড়ে থাকা ভবনে, যেমন – পুরনো অফিস, স্কুল অথবা পাব-এ স্বল্প ভাড়ায় থাকার সুযোগ পান কিছু মানুষ।
বিনিময়ে, তারা ওই সম্পত্তির দেখাশোনা করেন।
লন্ডনের ৪০-এর কোঠায় পা রাখা প্রোগ্রাম ম্যানেজার লুক উইলিয়ামস তেমনই একজন।
তিনি জানান, সাধারণত যেখানে মাসে কয়েক হাজার পাউন্ড ভাড়া লাগে, সেখানে তিনি অনেক কম খরচে একটি বিশাল ফ্ল্যাটে থাকছেন।
উইলিয়ামসের মতে, এই ধরনের আবাসনে থাকার সবচেয়ে বড় সুবিধা হল – এখানে অনেক বেশি জায়গা পাওয়া যায়।
তাঁর ফ্ল্যাটে দুটি হোম অফিস, বসার জায়গা এবং ব্যায়াম করার মত ফাঁকা স্থানও রয়েছে।
আর্থার ডিউক নামের একজন জানান, তাঁর ‘লাইভ-ইন গার্ডিয়ানস’ নামক সংস্থাটি এই ধরনের শূন্য বাড়িগুলোর ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে এবং মালিকদের সঙ্গে তত্ত্বাবধায়কদের সংযোগ স্থাপন করে।
ডিউক আরও বলেন, আগে যেখানে শুধুমাত্র তরুণ শিল্পী এবং সৃষ্টিশীল পেশার মানুষেরা এই ধরনের জীবনযাপনে অভ্যস্ত ছিলেন, এখন সেখানে বিভিন্ন পেশার মানুষজন, যেমন – ডাক্তার, আইনজীবী এবং হিসাবরক্ষকদের সংখ্যা বাড়ছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এই ধরনের আবাসনের চাহিদা বেড়েছে কয়েকগুণ।
বর্তমানে, আবেদনকারীর সংখ্যা বছরে ৫০ হাজারের বেশি।
সাধারণত, সম্পত্তি তত্ত্বাবধায়কদের ২৮ দিনের মধ্যে বাড়ি ছাড়তে বলা হতে পারে।
তবে উইলিয়ামস জানাচ্ছেন, এই ধরণের ব্যবস্থায় সুবিধা-অসুবিধা দুটোই আছে।
লন্ডনের মত শহরে যেখানে জীবনযাত্রার খরচ অনেক বেশি, সেখানে এই ধরনের বিকল্প আবাসনের ধারণা বেশ জনপ্রিয় হচ্ছে।
এমনকি, যারা বাড়ি কেনার সামর্থ্য রাখেন না, তাঁরাও এই ব্যবস্থায় উপকৃত হচ্ছেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, জীবনযাত্রার খরচ বেড়ে যাওয়ায় এবং ভাড়ার বাজারে অস্থিরতার কারণে এই ধরনের বিকল্পের চাহিদা বাড়ছে।
‘প্রপার্টি গার্ডিয়ানস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর প্রধান গ্রাহাম সিভার্স মনে করেন, বাড়ি ভাড়ার এই ঊর্ধ্বগতি মানুষের জীবনযাত্রাকে কঠিন করে তুলেছে।
তাঁর মতে, এই পরিস্থিতিতে এই ধরনের বাসস্থান অনেক বেশি সাশ্রয়ী হতে পারে।
যদিও লন্ডনের এই মডেলটি সরাসরি বাংলাদেশের জন্য প্রযোজ্য নাও হতে পারে, তবে এটি একটি উদাহরণ হতে পারে, যেখানে আবাসনের সমস্যা সমাধানে নতুন কিছু ভাবা হচ্ছে।
বাংলাদেশেও বাড়ির মালিকরা তাঁদের খালি পড়ে থাকা সম্পত্তির দেখাশোনার জন্য কর্মী নিয়োগ করেন।
এছাড়া, বিভিন্ন সরকারি এবং বেসরকারি উদ্যোগে স্বল্প খরচে আবাসনের ব্যবস্থা করার চেষ্টা চলছে।
হয়তো এই ধরনের উদ্ভাবনী সমাধানগুলো ভবিষ্যতে আমাদের দেশের মানুষের জন্য একটি ভালো বিকল্প হতে পারে।
তথ্য সূত্র: The Guardian