একটি জনপ্রিয় মার্কিন টেলিভিশন ধারাবাহিক ‘লস্ট’-এর ক্লাইম্যাক্স নিয়ে আজও বিতর্ক রয়েছে। ২০০৪ সালে শুরু হওয়া এই রহস্য-রোমাঞ্চকর সিরিজটির শেষ পর্ব প্রচারিত হওয়ার পর দর্শকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছিল।
সম্প্রতি, সেই সমাপ্তি নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে, অনেকে এর দুর্বলতাগুলো নিয়ে কথা বলছেন।
‘লস্ট’-এর গল্প একটি বিমান দুর্ঘটনার শিকার হওয়া কিছু মানুষের জীবন নিয়ে, যারা একটি রহস্যময় দ্বীপে আটকা পড়ে। শুরুতে, সিরিজটি দর্শকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল, কারণ এর প্লট ছিল আকর্ষণীয় এবং বিভিন্ন চরিত্রগুলোর মধ্যে সম্পর্কগুলো ছিল গভীর।
ধীরে ধীরে এর রহস্যগুলো দর্শকদের মধ্যে আগ্রহ তৈরি করে, যা দীর্ঘ সময় ধরে আলোচনার বিষয় ছিল।
কিন্তু, সিরিজের ফাইনাল এপিসোড, যা ২০১৩ সালের ২৩শে মে প্রচারিত হয়েছিল, তা দর্শকদের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি।
শেষ পর্বে, দ্বীপের বেঁচে যাওয়া চরিত্রদের ভবিষ্যৎ এবং তাদের জীবনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত তুলে ধরা হয়। এই পর্বে একটি “ফ্ল্যাশ সাইডওয়েজ” বা বিকল্প বাস্তবতা দেখানো হয়, যেখানে চরিত্রগুলো অন্য একটি রূপে নিজেদের খুঁজে পায়।
এই অংশে, জ্যাক নামের প্রধান চরিত্রটির মৃত্যু হয়, যা অনেক দর্শককে হতাশ করে। অনেকের মতে, সিরিজের শেষের এই আধ্যাত্মিক ব্যাখ্যা এবং কিছু চরিত্রের সম্পর্কের ওপর অতিরিক্ত জোর দেওয়াটা গল্পের মূল আকর্ষণ থেকে বিচ্যুত হয়েছে।
প্রথমে, অনেকেই এই সমাপ্তিকে ভালোভাবে নিয়েছিলেন, কারণ তারা চরিত্রগুলোর মধ্যেকার আবেগ এবং সম্পর্কের গভীরতা অনুভব করতে পেরেছিলেন। কিন্তু, সময়ের সাথে সাথে, অনেকেই এর দুর্বলতাগুলো উপলব্ধি করতে শুরু করেন।
বিশেষ করে, সিরিজের কিছু গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র, যেমন – মাইকেল ডসন এবং ওয়াল্ট, যাদের ফাইনাল দৃশ্যে দেখা যায়নি, তা অনেকের কাছে হতাশাজনক ছিল।
এই চরিত্রদের বাদ দেওয়া নিয়ে বিভিন্ন সময়ে সমালোচনা হয়েছে এবং এর কারণ হিসেবে সিরিজের নির্মাতাদের বর্ণবাদী আচরণের অভিযোগও উঠেছে।
‘লস্ট’-এর ফাইনাল এপিসোড নিয়ে বিতর্ক এখনো চলছে। অনেকে মনে করেন, সিরিজটি তার রহস্য এবং বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীর দিক থেকে সরে এসে অতিরিক্ত আবেগপ্রবণ হয়ে গিয়েছিল।
তবে, এটি অস্বীকার করার উপায় নেই যে ‘লস্ট’ টেলিভিশন ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। এটি দর্শকদের মধ্যে গভীর প্রভাব ফেলেছিল এবং তাদের মধ্যে চরিত্রগুলোর প্রতি ভালোবাসার জন্ম দিয়েছিল।
তথ্য সূত্র: পিপল