সন্তানের আইএস-এ যোগ দেওয়া: এক গভীর ক্ষত
সন্তান যখন জঙ্গি সংগঠনে নাম লেখায়, তখন মা-বাবার জীবনে নেমে আসে এক গভীর শোকের ছায়া। আইএস-এর মতো একটি ভয়ঙ্কর সংগঠনে ছেলের নাম লেখানো- এটা শুধু একটি পরিবারের জন্য নয়, বরং পুরো সমাজের জন্য এক উদ্বেগের বিষয়।
এই ধরনের ঘটনাগুলোতে ভালোবাসার গভীরতা, সমাজের চোখে খারাপ হয়ে যাওয়ার কষ্ট, এবং স্বাভাবিক জীবনে ফেরার কঠিন পথ- এই বিষয়গুলো এক জটিল রূপ নেয়।
বাবা-মায়েদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয় সন্তানের প্রতি তাদের ভালোবাসাকে টিকিয়ে রাখা। সমাজের চোখে হয়তো তাদের ছেলে বা মেয়ে অপরাধী, কিন্তু একজন মা-বাবার কাছে সন্তান সবসময়ই প্রিয়।
তারা চান তাদের সন্তান যেন আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসে। তারা জানেন, এই যাত্রাটা সহজ নয়। আইএস-এর মতো জঙ্গিগোষ্ঠীতে যোগ দেওয়ার কারণগুলো অনেক গভীরে প্রোথিত থাকে।
অনেক সময় দেখা যায়, তরুণ বয়সে সঠিক পথ খুঁজে না পাওয়া, ভুল বন্ধু নির্বাচন, অথবা অনলাইনে প্রচারিত বিদ্বেষপূর্ণ মতাদর্শের প্রভাবে তারা এই পথে পা বাড়ায়।
এই পরিস্থিতিতে পরিবারের সদস্যদের মানসিক স্বাস্থ্য ভেঙে পড়ার সম্ভবনা থাকে। তারা একদিকে যেমন সন্তানের জন্য উদ্বিগ্ন থাকেন, তেমনি সমাজের কাছ থেকে আসা নানা ধরনের কটূক্তি ও সমালোচনার শিকার হন।
অনেক সময় আত্মীয়-স্বজন এবং প্রতিবেশীরাও তাদের এড়িয়ে চলতে শুরু করেন। এই অবস্থায় কাউন্সেলিং এবং মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক সহায়তা খুবই জরুরি।
বাংলাদেশেও, জঙ্গিবাদের বিস্তার রোধে সরকার এবং বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন কাজ করছে। তরুণদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো, ভুল পথে যাওয়া যুবকদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা, এবং তাদের পুনর্বাসনের জন্য নানা ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
এক্ষেত্রে পরিবারগুলোর জন্য উপযুক্ত সহায়তা প্রদান করা হয়, যাতে তারা তাদের সন্তানদের পাশে থাকতে পারে।
আইএস-এর মতো জঙ্গি সংগঠনে যোগ দেওয়া শিশুদের সমাজে ফিরিয়ে আনা একটি কঠিন কাজ। এর জন্য প্রয়োজন ধৈর্য, ভালোবাসা, এবং সঠিক দিকনির্দেশনা।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, সমাজের প্রতিটি স্তরে সচেতনতা বৃদ্ধি করা, যাতে কোনো তরুণ ভুল পথে পা না বাড়ায়।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা