যুক্তরাষ্ট্র কাঁপানো হত্যাকাণ্ডে মাঙ্গিওনের বিচার: ভয়ানক পরিণতি?

যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্যখাতের শীর্ষ নির্বাহী ব্রায়ান থম্পসনকে হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত লুইগি ম্যাংগিওনের বিচার শুরু হতে যাচ্ছে। আগামী শুক্রবার ম্যানহাটনের একটি ফেডারেল আদালতে তার হাজির হওয়ার কথা রয়েছে।

২৬ বছর বয়সী ম্যাংগিওনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার মৃত্যুদণ্ড হতে পারে। খবরটি এমন সময়ে এসেছে যখন যুক্তরাষ্ট্রে লাভজনক স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে বিতর্ক চলছে।

অভিযোগ অনুযায়ী, গত ডিসেম্বরের শুরুতে নিউইয়র্কের একটি হোটেলের বাইরে ইউনাইটেড হেলথকেয়ারের প্রধান নির্বাহী ব্রায়ান থম্পসনকে গুলি করে হত্যা করেন ম্যাংগিওন। ঘটনার কয়েকদিনের মধ্যেই পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের আলটোনায় একটি ম্যাকডোনাল্ডস রেস্টুরেন্ট থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

সেখানকার এক কর্মী তাকে শনাক্ত করার পর পুলিশকে খবর দেন।

ফেডারেল আদালতে ম্যাংগিওনের বিরুদ্ধে হত্যার পাশাপাশি, আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আরও কয়েকটি ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। নিউইয়র্কের রাজ্য আদালতেও তার বিরুদ্ধে একাধিক হত্যা ও অস্ত্র বিষয়ক মামলা বিচারাধীন।

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডি জানিয়েছেন, তিনি ম্যাংগিওনের মৃত্যুদণ্ড চেয়েছেন। বন্ডির মতে, থম্পসনকে হত্যা ছিল পূর্বপরিকল্পিত এবং ঠাণ্ডা মাথার খুন।

তিনি আরও বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের “সহিংসতা বন্ধ করা এবং আমেরিকাকে পুনরায় নিরাপদ করার” নীতির অংশ হিসেবেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রে এর আগে ফেডারেল আদালতে মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণার ঘটনা বিরল। এর আগে, ২০১১ সালে নিউইয়র্কে একটি ট্রাক হামলার ঘটনায় আটজন নিহত হওয়ার ঘটনায় ইসলামপন্থী জঙ্গি সাইফোল্লা সাইপভের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ড চেয়েছিল সরকার।

তবে, সেই মামলায় জুরিরা সাইপভের মৃত্যুদণ্ডের বিষয়ে একমত হতে পারেননি, ফলে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের সময় মৃত্যুদণ্ডের আবেদন জানানোর ঘটনা বেড়েছিল। তাদের ধারণা, ম্যাংগিওন দোষ স্বীকার করলে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়ার বিষয়ে সরকারের সঙ্গে কোনো সমঝোতা নাও হতে পারে।

কারণ, এর মাধ্যমে সরকার “অপরাধের বিরুদ্ধে কঠোর” অবস্থান দেখাচ্ছে বলে প্রমাণ করতে চাইছে।

যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্যখাতে ইউনাইটেড হেলথকেয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ নাম। এই কোম্পানিটি মূলত মুনাফা-কেন্দ্রিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করে থাকে।

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যদি এর তুলনা করতে যাই, তবে দেশের কিছু বেসরকারি স্বাস্থ্য বীমা কোম্পানির কথা বলা যেতে পারে, যদিও তাদের কার্যক্রমের পরিধি ও কর্মপদ্ধতি ভিন্ন।

মামলার শুনানিতে এখন পর্যন্ত যা জানা গেছে, তাতে এই হত্যাকাণ্ডের পেছনের কারণ এখনো স্পষ্ট নয়। তবে, এই মামলার রায় যুক্তরাষ্ট্রের বিচারব্যবস্থার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে, এমনটা ধারণা করা হচ্ছে।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *