কলঙ্কিত: নরখাদক লুকা ম্যাগনোটা এখন কেমন আছে?

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোড়ন সৃষ্টিকারী এক চাঞ্চল্যকর ঘটনার জন্ম দিয়েছিলেন লুকা ম্যাগনোটা। ২০১২ সালে চীনের এক ছাত্র জুন লিনের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের দায়ে তিনি দোষী সাব্যস্ত হন। খুনের পর মৃতদেহের বিভিন্ন অংশ তিনি ক্যানাডার রাজনৈতিক নেতাদের কাছে পাঠান, যা বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় তোলে।

লুকা ম্যাগনোটার আসল নাম ছিল এরিক ক্লিনটন নিউম্যান। ১৯৮২ সালে কানাডার অন্টারিও প্রদেশের স্কারবোরোতে তার জন্ম। শৈশবে বাবা-মায়ের বিচ্ছেদের পর তিনি মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগতে শুরু করেন। পরবর্তীতে প্যারানয়েড স্কিৎজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত হন তিনি। ম্যাগনোটা বিভিন্ন সময়ে মডেলিং, প্রাপ্তবয়স্কদের চলচ্চিত্রে অভিনয় এবং রিয়েলিটি শো-তে অংশগ্রহণের চেষ্টা করেন।

২০০৬ সালে তিনি নিজের নাম পরিবর্তন করে লুকা রোকো ম্যাগনোটা রাখেন।

ঘটনার সূত্রপাত হয় ২০১২ সালের মে মাসে। মন্ট্রিলে বসবাস করা চীনের নাগরিক জুন লিনকে হত্যা করেন ম্যাগনোটা। এরপর তিনি লিনের শরীরের কিছু অংশ ক্যানাডার ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টি এবং বিরোধী দল লিবারেল পার্টির অফিসে পাঠান। তদন্তকারীরা লিনের খণ্ডিত দেহ একটি স্যুটকেসে খুঁজে পান। হত্যার ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার পরে ম্যাগনোটা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান।

হত্যাকাণ্ডের তদন্তে নামে পুলিশ। ঘটনার কয়েক দিন পর, জার্মানির বার্লিনে একটি ইন্টারনেট ক্যাফেতে ম্যাগনোটাকে শনাক্ত করা হয়। সেখানকার এক কর্মচারী ম্যাগনোটাকে চিনতে পারেন এবং পুলিশকে খবর দেন। পরে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

২০১৪ সালের ডিসেম্বরে, আদালত ম্যাগনোটাকে প্রথম-ডিগ্রি হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে। একইসাথে, মৃতদেহের প্রতি অবমাননা, অশ্লীল বস্তু প্রকাশ এবং সেগুলো বিতরণের অভিযোগে তাকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয় এবং ২৫ বছর পর প্যারোলে মুক্তির সম্ভাবনা রয়েছে।

অন্যান্য অপরাধের জন্য তাকে আরও ১৯ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

বর্তমানে, ম্যাগনোটা কানাডার লা মাকাজা ইনস্টিটিউশনে বন্দী জীবন যাপন করছেন। ২০৩৪ সালের জুন মাসে তিনি দিনের বেলায় প্যারোলে মুক্তি পাওয়ার এবং ২০৩৭ সালের জুনে সম্পূর্ণ প্যারোলে মুক্তি পাওয়ার যোগ্য হবেন।

তথ্যসূত্র: পিপল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *