ইউক্রেন: সবার সমর্থন নেই! বিস্ফোরক মন্তব্য ম্যাক্রোঁর, বাড়ছে উত্তেজনা!

ইউক্রেন সংকট সমাধানে ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে মতৈক্যের অভাব নিয়ে মুখ খুললেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। রাশিয়ার সঙ্গে একটি সম্ভাব্য শান্তি চুক্তির শর্ত হিসেবে ইউক্রেনে সেনা মোতায়েনের প্রস্তাব নিয়ে সব ইউরোপীয় দেশ একমত নয় বলে জানান তিনি।

প্যারিসে প্রায় ৩০টি দেশের নেতা এবং ন্যাটোর শীর্ষ কর্মকর্তাদের নিয়ে আয়োজিত এক সম্মেলনে ম্যাক্রোঁ এই মন্তব্য করেন। ইউক্রেনকে সমর্থন জানানো এবং রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধবিরতি আলোচনার প্রেক্ষাপটে কিয়েভের সামরিক শক্তি বাড়াতে এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সম্মেলনে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কেইর স্টারমার ও ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনিসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

ম্যাক্রোঁ জানান, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্য এই উদ্যোগের নেতৃত্ব দিচ্ছে। তারা কয়েকটি দেশের সমন্বয়ে একটি ‘আশ্বাসদানকারী বাহিনী’ গঠন করতে চায়। এই বাহিনী শান্তিরক্ষী হিসেবে কাজ করবে না, অথবা ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর বিকল্পও হবে না। তিনি আরও উল্লেখ করেন, কিছু দেশের সামরিক সক্ষমতা কম এবং রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে তারা এই বাহিনীতে যোগ দিতে দ্বিধা বোধ করছে।

ফরাসি প্রেসিডেন্ট জোর দিয়ে বলেন, এই বাহিনীর মূল উদ্দেশ্য হবে রাশিয়ার সম্ভাব্য আগ্রাসন প্রতিহত করা। ম্যাক্রোঁ এবং স্টারমার যৌথভাবে ইউরোপের ‘স্থিতিশীল ও টেকসই শান্তির জন্য কর্ম জোট’-এর নেতৃত্ব দেবেন বলেও সম্মেলনে সিদ্ধান্ত হয়। এই জোট ‘আগামী দিনের ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর’ রূপরেখা তৈরিতেও কাজ করবে।

যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা হিসেবে ফ্রান্স এরই মধ্যে ২ বিলিয়ন ইউরোর বেশি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, যার মধ্যে ক্ষেপণাস্ত্র, যুদ্ধবিমান এবং বিমান প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এই সম্মেলনের কয়েক দিন আগে, যুক্তরাষ্ট্র কৃষ্ণ সাগরে যুদ্ধবিরতির জন্য রাশিয়া ও ইউক্রেনের সঙ্গে পৃথক চুক্তি স্বাক্ষর করে। তবে রাশিয়া কিছু শর্ত জুড়ে দিয়েছে, যার মধ্যে রুশ রাষ্ট্রীয় কৃষি ব্যাংক ‘রোজেলখোজব্যাংক’-এর ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া এবং সুইফট পেমেন্ট সিস্টেমে ব্যাংকটিকে পুনরায় যুক্ত করার দাবি অন্যতম।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) রোজেলখোজব্যাংককে সুইফট থেকে বাদ দিয়েছে। ইইউ জানিয়েছে, রাশিয়া ইউক্রেন থেকে সেনা প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত ব্যাংকটিকে পুনর্বহাল করা হবে না। এই সম্মেলনের মূল লক্ষ্য হলো, সংঘাত অবসানে যেকোনো ধরনের আলোচনায় ইউরোপের ভূমিকা নিশ্চিত করা। যদিও সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা সরাসরি উপস্থিত ছিলেন না, তবে ফরাসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সম্মেলনের ফলাফল মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে শেয়ার করা হবে। ম্যাক্রোঁ সম্মেলনের আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গেও কথা বলেছেন।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *