**ম্যাডেলিন ম্যাকক্যান মামলা: অর্থ পরিশোধের কারণে সন্দেহভাজন ব্যক্তির মুক্তি সম্ভবত দ্রুত**
২০০৭ সালে পর্তুগালের প্রাইয়া দা লুজে নিখোঁজ হওয়া ব্রিটিশ শিশু ম্যাডেলিন ম্যাকক্যান মামলার প্রধান সন্দেহভাজন ক্রিশ্চিয়ান ব্রুকনারকে সম্ভবত কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হতে পারে। সম্প্রতি তাঁর একটি জরিমানা পরিশোধ করা হয়েছে, যে কারণে তাঁর মুক্তির বিষয়টি এখন নতুন করে আলোচনায় এসেছে।
জার্মান সংবাদ সংস্থা ডিপিএ’কে উদ্ধৃত করে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম জানাচ্ছে, ব্রুকনার বর্তমানে অন্য একটি অপরাধের দায়ে কারাবন্দী রয়েছেন। ম্যাডেলিনের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।
সাধারণত ২০২৬ সালের জানুয়ারিতে ব্রুকনারের মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল, কিন্তু জরিমানা পরিশোধের কারণে তিনি সম্ভবত চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে মুক্তি পেতে পারেন।
ম্যাডেলিনের ঘটনাটি বিশ্বজুড়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। ২০০৭ সালের মে মাসে, যখন ম্যাডেলিনের বয়স ছিল মাত্র তিন বছর, তাঁর বাবা-মা এবং যমজ ছোট ভাইবোনের সাথে ছুটি কাটাতে পর্তুগালে গিয়েছিলেন।
এক সন্ধ্যায়, বাবা-মা কাছের একটি রেস্টুরেন্টে রাতের খাবার খেতে গিয়েছিলেন, আর শিশুদের অ্যাপার্টমেন্টে ঘুমিয়ে রেখেছিলেন। গভীর রাতে তাঁরা যখন ফিরে আসেন, তখন দেখেন ম্যাডেলিন বিছানায় নেই। এরপর থেকেই শুরু হয় তাঁর খোঁজ।
জার্মান কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ব্রুকনারের জরিমানা ছিল জালিয়াতি এবং শারীরিক ক্ষতির সাথে সম্পর্কিত কিছু পুরনো মামলার ফল। এই জরিমানা পরিশোধ করেছেন একজন বেনামী ব্যক্তি।
জানা গেছে, তিনি জার্মানির ফেডারেল ক্রিমিনাল পুলিশ অফিসের প্রাক্তন কর্মচারী ছিলেন। এমনকি এই অর্থ পরিশোধের পরে তিনি নাকি তা ফেরত পেতেও চেষ্টা করেছিলেন।
বর্তমানে ব্রুকনার একটি ভিন্ন অপরাধের জন্য কারাবন্দী রয়েছেন। তিনি এর আগে, ২০০৫ সালে পর্তুগালে এক ৭২ বছর বয়সী আমেরিকান নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন এবং এই মামলায় তাঁর সাত বছরের কারাদণ্ড হয়।
ম্যাডেলিনের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনার সঙ্গে তাঁর যোগসূত্র খুঁজে পাওয়ার পর, তিনি মাদক ব্যবসার দায়ে জার্মানিতে ২১ মাসের কারাদণ্ড ভোগ করেছিলেন।
ম্যাডেলিনের মা-বাবা, কেট এবং গ্যারি ম্যাকক্যান, তাঁদের মেয়ের জন্মদিনে ও বড়দিনে এখনো উপহার কিনে রাখেন। তাঁরা বিশ্বাস করেন, একদিন না একদিন তাঁরা তাঁদের মেয়ের সন্ধান পাবেন।
প্রসিকিউটর অফিসের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, যদি ভুলবশত জরিমানা পরিশোধ করা হয়ে থাকে, তাহলে তাঁরা ‘ফেরত দেওয়ার সম্ভাবনা আছে কিনা’ তা খতিয়ে দেখবেন।
ম্যাডেলিনের এখনো কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি এবং তাঁর মৃতদেহও উদ্ধার করা যায়নি। এই মামলার তদন্ত এখনো চলছে, এবং সবাই অধীর আগ্রহে ঘটনার সত্যতা জানার অপেক্ষায় রয়েছে।
তথ্য সূত্র: পিপল