ব্রিটিশ বালিকা ম্যাডেলিন ম্যাকক্যান-এর অন্তর্ধানের ঘটনায় সন্দেহভাজন এক ব্যক্তিকে জার্মানির কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। ২০০৭ সালে পর্তুগালে নিখোঁজ হওয়া এই ব্রিটিশ বালিকার ঘটনা আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল।
খবর অনুযায়ী, অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম ক্রিশ্চিয়ান ব্রুকনার।
জার্মান পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ব্রুকনার একটি ভিন্ন মামলায় সাজা ভোগ করার পর সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছেন। ২০১৩ সালে পর্তুগালে একজন ৭২ বছর বয়সী মার্কিন নারীকে ধর্ষণের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর তাকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। বুধবার সকালে তিনি জার্মানির হ্যানোভারের কাছে সেহন্ডে কারাগার থেকে মুক্তি পান।
২০২০ সালের জুন মাসে জার্মান কৌঁসুলিরা জানান, ম্যাডেলিন ম্যাকক্যানকে অপহরণ ও হত্যার সন্দেহে ব্রুকনারের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। ২০০৭ সালের ৩ মে পর্তুগালের প্রাইয়া দা লুজে একটি অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্স থেকে তিন বছর বয়সী ম্যাডেলিন নিখোঁজ হয়। তদন্তকারীরা ধারণা করছেন, বালিকাটি ততদিনে মারা গেছে।
ম্যাডেলিনের অন্তর্ধানের ঘটনায় ব্রিটিশ, পর্তুগিজ এবং জার্মান – এই তিনটি দেশের তদন্তকারীরা এখনো ঘটনার তদন্ত করছেন। ব্রুকনার বরাবরই এই ঘটনায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন। তবে, তার মুক্তি এই তদন্তের ওপর কোনো প্রভাব ফেলবে না বলেই জানা গেছে। ব্রিটিশ মেট্রোপলিটন পুলিশও ম্যাকক্যান অন্তর্ধানের ঘটনায় ব্রুকনারকে সন্দেহ করে এবং তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চেয়েছিল, কিন্তু তিনি রাজি হননি।
ব্রুকনারের আইনজীবী ফ্রিডরিশ ফুলশার জানিয়েছেন, পর্যাপ্ত প্রমাণ থাকলে তার মক্কেলের বিরুদ্ধে অনেক আগেই অভিযোগ গঠন করা হতো। ব্রুকনার একসময় পর্তুগালে দীর্ঘদিন ছিলেন। ম্যাডেলিনের নিখোঁজ হওয়ার সময় তিনি আলগার্ভের প্রাইয়া দা লুজে থাকতেন।
২০১৭ সাল পর্যন্ত ব্রুকনার পর্তুগালে বেশ কয়েকটি যৌন অপরাধ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। গত বছর তার বিচার হয়েছিল, তবে আদালত পর্যাপ্ত প্রমাণের অভাবে তাকে বেকসুর খালাস করে। আদালত জানিয়েছিল, সাক্ষীদের বক্তব্য নির্ভরযোগ্য ছিল না এবং তাদের কেউ কেউ গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে প্রভাবিত হয়েছিলেন।
তবে ব্রুকনারের মুক্তি পাওয়ার পর তার কিছু শর্ত পালন করতে হবে। হিল্ডেসহাইম রাজ্যের আদালত এখনো পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়নি যে, তার মুক্তির পর কোনো শর্ত থাকবে কিনা। তবে আঞ্চলিক সম্প্রচারকারী এনডিআর-কে ফুলশার নিশ্চিত করেছেন, তার মক্কেলকে একটি ইলেকট্রনিক পায়ের ট্যাগ পরতে হবে, নিয়মিতভাবে প্রবেশন অফিসে রিপোর্ট করতে হবে এবং পাসপোর্ট জমা দিতে হবে।
এছাড়াও, ব্রুকনারের বিরুদ্ধে জার্মানির ওল্ডেনবুর্গে একটি আদালত মামলা চলছে, যেখানে তার বিরুদ্ধে একজন কারারক্ষীকে অপমান করার অভিযোগ আনা হয়েছে। একটি জেলা আদালত তাকে ছয় সপ্তাহের কারাদণ্ড দিলেও, তার আইনজীবী আপিল করেছেন।
তথ্য সূত্র: সিএনএন