উষ্ণ গ্রীষ্মের ছুটিতে ভ্রমণের জন্য পছন্দের গন্তব্য হিসেবে উইসকনসিনের ম্যাডিসন শহরের নাম উঠে এসেছে। গুগল ফ্লাইটসের ২০২৩ সালের গ্রীষ্মকালীন ভ্রমণের প্রবণতা বিষয়ক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। যারা ভ্রমণের পরিকল্পনা করছেন, তাদের জন্য এটি একটি আকর্ষণীয় খবর হতে পারে।
আমেরিকার এই শহরটি তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, খাদ্যরসিকদের জন্য বিভিন্ন স্বাদের সম্ভার এবং স্থাপত্যকলার জন্য ইতোমধ্যে পরিচিতি লাভ করেছে। ম্যাডিসন শহরটি দুটি হ্রদের মাঝে অবস্থিত, যা এর সৌন্দর্যকে আরও বাড়িয়ে তোলে। এখানকার লেক মেডোটা এবং লেক মনোনা শহরের কেন্দ্রে অবস্থিত হওয়ায় যেকোনো স্থান থেকে মনোরম দৃশ্য উপভোগ করা যায়।
“আমেরিকার ডেইরি ল্যান্ড” হিসেবে পরিচিত উইসকনসিনের রাজধানী হলো এই ম্যাডিসন শহর। এখানকার পনিরের খ্যাতি বিশ্বজুড়ে, যা খাদ্যপ্রেমীদের জন্য একটি বিশেষ আকর্ষণ। ফ্রোমাজিনেশন-এর মতো দোকানে বিভিন্ন স্বাদের পনিরের স্বাদ নেওয়া যেতে পারে। এছাড়া, শহরের বাইরে পাওলি নামক একটি ছোট শহরে অবস্থিত সেভেন একর ডেইরি কোম্পানির রেস্তোরাঁ, হোটেল এবং আইসক্রিম শপ-এও যেতে পারেন।
ম্যাডিসন শহরে শুধু পনিরই নয়, রয়েছে বিভিন্ন ধরনের খাদ্য সংস্কৃতির সমাহার। এখানে লাওস ঘরানার খাবার পরিবেশন করা হয়, যেমন – জেমস বিয়ার্ড-এর মনোনীত শেফ জেমি ব্রাউন-সুকাসেউমের ‘আহান’ -এ। তাছাড়াও, রাশিয়ান ডাম্পলিং-এর জন্য জনপ্রিয় ‘পাউলস পেল’মেনি’র কথাও উল্লেখ করার মতো। এখানে আপনি মাত্র ৭ ডলারে (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৭৫০ টাকার মতো) বিভিন্ন স্বাদের খাবার উপভোগ করতে পারবেন। তাই যারা ভোজনরসিক, তাদের জন্য ম্যাডিসন হতে পারে একটি আদর্শ স্থান।
ঐতিহ্যপূর্ণ স্থাপত্যকলার দিক থেকেও ম্যাডিসন পিছিয়ে নেই। বিখ্যাত স্থপতি ফ্রাঙ্ক লয়েড রাইটের ডিজাইন করা কিছু স্থাপত্য এখানে বিদ্যমান। মনোনা টেরেস এবং ফার্স্ট ইউনিটারিয়ান সোসাইটি মিটিং হাউজের মতো স্থাপত্যশৈলী দর্শকদের মুগ্ধ করে। এছাড়াও, ১৯১৭ সালে নির্মিত ক্যাপিটল বিল্ডিং-এর নান্দনিকতাও বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
শহরের বাইরে ভ্রমণ করতে ইচ্ছুক ব্যক্তিরা উইসকনসিনের অন্যান্য আকর্ষণীয় স্থানগুলোও ঘুরে দেখতে পারেন। যেমন – উইসকনসিন ডেলস, যা ম্যাডিসন থেকে প্রায় এক ঘণ্টার দূরত্বে অবস্থিত। এছাড়া, মিলওয়াকি (দেড় ঘণ্টা) এবং লা ক্রস (আড়াই ঘণ্টা) -এর মতো শহরগুলোতেও সহজে ভ্রমণ করা সম্ভব।
সবমিলিয়ে, ম্যাডিসন একটি আকর্ষণীয় শহর, যা গ্রীষ্মের ছুটিতে ভ্রমণের জন্য একটি চমৎকার গন্তব্য হতে পারে। এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, বৈচিত্র্যপূর্ণ খাদ্য এবং স্থাপত্যকলার মিশ্রণ ভ্রমণকারীদের মন জয় করবে নিশ্চিত।
তথ্য সূত্র: ট্রাভেল অ্যান্ড লেজার