যুক্তরাষ্ট্রের একজন ফেডারেল বিচারক বলেছেন, ফিলিস্তিনপন্থী এক কর্মীকে আটকের জন্য অভিবাসন আইনের একটি ধারা ব্যবহার করা সম্ভবত ‘অসাংবিধানিকভাবে অস্পষ্ট’। সম্প্রতি এই রায় দিয়েছেন নিউ জার্সির ফেডারেল আদালতের বিচারক।
মাহমুদ খলিল নামের ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র নীতির প্রতি হুমকি স্বরূপ।
জানা গেছে, মাহমুদ খলিল একজন ফিলিস্তিনপন্থী কর্মী এবং যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী বাসিন্দা। তিনি কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্প্রতি স্নাতক সম্পন্ন করেছেন।
বিচারক মাইকেল ফারবিয়ার্জের দেওয়া দীর্ঘ রায়ে বলা হয়েছে, মাহমুদ খলিলের বিরুদ্ধে সরকার যে অভিযোগ এনেছে, তা সম্ভবত “ভুলভাবে প্রয়োগ করা হয়েছে”।
সরকারের ভাষ্যমতে, মাহমুদ খলিল ইহুদিবিদ্বেষের বিরুদ্ধে পররাষ্ট্র নীতির লক্ষ্য পূরণে হুমকি স্বরূপ।
আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, সরকারের এই আইন প্রয়োগের বিষয়টি খলিলের ক্ষেত্রে ‘অসাংবিধানিকভাবে অস্পষ্ট’।
তবে, বিচারক খলিলকে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দেননি। কারণ, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দা হওয়ার সময় কিছু সংস্থার সঙ্গে তার সম্পর্ক গোপন করেছিলেন, এমন অভিযোগও রয়েছে।
মার্চ মাসে কলাম্বিয়ার কাছে গ্রেপ্তারের পর থেকেই খলিল আটক রয়েছেন।
এরপর, ইহুদিবিদ্বেষের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের নামে ট্রাম্প প্রশাসনের করা বেশ কয়েকটি উচ্চ-আলোচিত গ্রেপ্তারের মধ্যে তিনি অন্যতম।
মাহমুদ খলিলের আইনজীবীরা বলছেন, সরকার যে প্রমাণ দেখাচ্ছে, তা যথেষ্ট নয়।
তাদের দাবি, পররাষ্ট্র সচিব মার্কো রুবিওর একটি চিঠির ওপর ভিত্তি করে এই অভিযোগ আনা হয়েছে, যেখানে কোনো অপরাধমূলক কাজের কথা উল্লেখ করা হয়নি।
আইনজীবীরা আরও বলছেন, মাহমুদ খলিলকে তাঁর রাজনৈতিক মত প্রকাশের কারণে নিশানা করা হচ্ছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের প্রথম সংশোধনী লঙ্ঘন করে।
বিচারক ফারবিয়ার্জ তাঁর রায়ে এই যুক্তির প্রতি সহানুভূতি দেখিয়েছেন।
তিনি উল্লেখ করেছেন, পররাষ্ট্র সচিব রুবিও এমন কোনো সিদ্ধান্ত দেননি, যেখানে বলা হয়েছে খলিলের কথিত কর্মকাণ্ডের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অন্য কোনো দেশের সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বিচারক আরও বলেছেন, এই ধরনের অভিযোগে খলিলকে দেশ থেকে বের করে দেওয়া নজিরবিহীন হবে।
মাহমুদ খলিলের আইনি দল এই রায়ের প্রশংসা করে বলেছে, তাঁরা দ্রুত বিচারকের চাওয়া অতিরিক্ত তথ্য সরবরাহ করবেন, যাতে খলিলকে তাঁর স্ত্রী ও নবজাতকের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া যায়।
এদিকে, খলিলের মামলাটি বর্তমানে লুইসিয়ানার একটি ইমিগ্রেশন আদালতে বিচারাধীন।
গত সপ্তাহে সেখানে শুনানিতে, তাঁর আইনজীবীরা জানান, খলিলকে অবৈধভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং কোনো পরোয়ানা ছাড়াই তাঁকে আটক করা হয়েছে।
আদালত সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন।
তথ্য সূত্র: সিএনএন