আদিবাসী ঐতিহ্য: মেইনের নতুন কেন্দ্রে চমক! কিভাবে হলো?

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মেইন অঙ্গরাজ্যে অবস্থিত একটি জাতীয় স্মৃতিসৌধে আদিবাসী ওয়াবানাকি সম্প্রদায়ের সংস্কৃতিকে বিশেষভাবে সম্মানিত করা হচ্ছে। এখানকার নতুন একটি অভ্যর্থনা কেন্দ্র (Welcome Center) তৈরি করা হয়েছে, যেখানে এই অঞ্চলের আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতির প্রতি গভীর মনোযোগ দেওয়া হয়েছে।

এই উদ্যোগের মাধ্যমে, ভূমিটির আসল মালিক, ওয়াবানাকি উপজাতিদের কথা বিশেষভাবে তুলে ধরা হয়েছে।

ঐতিহ্যবাহী এই স্মৃতিসৌধটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘টেকাকাপিমক’, যার অর্থ ‘দৃষ্টির সীমা পর্যন্ত’। পেনবস্কট ভাষায় এই শব্দের অর্থ ‘যা দেখা যায়’।

আধুনিক স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত এই কেন্দ্রটি, প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের সম্পর্কের এক দারুণ উদাহরণ। এটি তৈরি করতে সহযোগিতা করেছেন বার্ট’স বীজ-এর প্রতিষ্ঠাতা রক্সান কুইম্বির পরিবার, চারটি উপজাতি গোষ্ঠী, বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা এবং যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় উদ্যান পরিষেবা।

আগে, এই অঞ্চলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং ঐতিহাসিক গুরুত্ব তুলে ধরতে হেনরি ডেভিড थोरोর (Henry David Thoreau) মত ব্যক্তিত্বদের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করা হতো। কিন্তু বর্তমানে, এই কেন্দ্রের মাধ্যমে আদিবাসী ওয়াবানাকি উপজাতিদের দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রধান্য দেওয়া হচ্ছে। এর কারণ, এই অঞ্চলের আদিবাসী জনগোষ্ঠীর দীর্ঘদিনের সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের প্রতি সম্মান জানানো।

ওয়াবানাকি উপজাতিদের মধ্যে রয়েছে ম্যালিসিট, মিকম্যাক, পাসামাকুওডি এবং পেনবস্কট সম্প্রদায়। এই কেন্দ্রটিতে তাদের তৈরি শিল্পকর্ম, ঐতিহাসিক তথ্য এবং তাদের ভাষায় অনুবাদ করা বিভিন্ন বিষয় উপস্থাপন করা হয়েছে।

এখানকার প্রদর্শনীগুলোতে নৌকার ব্যবহার, প্রাচীনকালের মাছ ধরার কৌশল এবং রাতের আকাশের তারা দেখা সহ স্থানীয় বন্যজীবন সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা দেওয়া হয়েছে। এখানকার মেঝেতে পেনবস্কট নদীর উপনদীগুলোর একটি নকশা তৈরি করা হয়েছে, যা এই অঞ্চলের আদিবাসী জনগোষ্ঠীর সঙ্গে প্রকৃতির গভীর সম্পর্ককে তুলে ধরে।

এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হলো, আদিবাসী সংস্কৃতিকে রক্ষা করা এবং তাদের ঐতিহ্যকে নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেওয়া। কুইম্বির ছেলে লুকাস সেন্ট ক্লিয়ার জানান, তারা আমেরিকার আসল ইতিহাস তুলে ধরতে চান, যেখানে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর অবদানকে গুরুত্ব দেওয়া হবে।

এই ধরনের উদ্যোগ ভবিষ্যতের জন্য একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।

এই কেন্দ্রে আসা দর্শনার্থীরা এখন আদিবাসী সংস্কৃতির সমৃদ্ধ ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারবেন। এখানকার পরিবেশ আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং তাদের সংস্কৃতিকে উদযাপন করে।

এই জাতীয় স্মৃতিসৌধ তৈরি এবং রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে, স্থানীয় সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখার পাশাপাশি, সেখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকেও সংরক্ষণ করা সম্ভব হবে।

তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *