ভয়ঙ্কর আগুনে জ্বলছে মালয়েশিয়া! গ্যাস পাইপলাইন দুর্ঘটনার বীভৎস দৃশ্য

মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরের কাছাকাছি একটি এলাকায় গ্যাস পাইপলাইন বিস্ফোরণে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে একশোর বেশি মানুষ আহত হয়েছেন এবং পুড়ে গেছে বহু ঘরবাড়ি।

মঙ্গলবার সকালে সেলানগর প্রদেশের পুত্রা হাইটস-এ এই দুর্ঘটনা ঘটে, যা ঈদের ছুটির মধ্যে সংঘটিত হওয়ায় পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়ে পড়ে।

স্থানীয় সময় সকাল ৮টা ১০ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় অনুযায়ী ভোর ২টা ১০ মিনিট) একটি শক্তিশালী বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়, এরপরই বিশাল আকারের অগ্নিকাণ্ড শুরু হয়।

রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন তেল ও গ্যাস কোম্পানি পেট্রোনাসের গ্যাস পাইপলাইন থেকে গ্যাস বের হয়ে আসায় এই বিস্ফোরণ ঘটে বলে জানা গেছে। ঘটনার পরপরই আগুন দ্রুত আশেপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পরে, বিশেষ করে ঈদের ছুটির কারণে যখন মানুষজন উৎসবের আমেজে ছিলেন, তখন এই ঘটনায় চরম আতঙ্ক সৃষ্টি হয়।

এ পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী, অন্তত ১১০ জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন এবং তাদের মধ্যে ৬৩ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আহতদের মধ্যে অনেকের শরীরের বিভিন্ন অংশ পুড়ে গেছে এবং শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা দিয়েছে। এছাড়াও, আগুনে প্রায় ৪৯টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে, এখন পর্যন্ত কোনো মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি।

দুর্ঘটনার পর উদ্ধারকর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কাজ শুরু করে। স্থানীয় কর্মকর্তাদের মতে, আটকে পড়া বাসিন্দাদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে এবং আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এরই মধ্যে প্রায় ৮২ জন বাসিন্দাকে উদ্ধার করা হয়েছে এবং তাদের সাময়িকভাবে একটি মসজিদে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত তারা সেখানেই থাকবেন।

সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘটনার ছবি ও ভিডিও দ্রুত ছড়িয়ে পরে, যা দেখে অনেকে ঘটনার ভয়াবহতা উপলব্ধি করতে পারেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, তারা প্রথমে বিকট শব্দ এবং এরপর তীব্র ঝাঁকুনি অনুভব করেন, যা তাদের ঘরের দরজা-জানলা পর্যন্ত কাঁপিয়ে দেয়।

স্থানীয় একটি সংবাদপত্রের মাধ্যমে জানা যায়, ঘটনার দুইশ’ মিটারের মধ্যে বসবাসকারী একজন বাসিন্দা বলেছেন, “হঠাৎ করেই আমরা বিকট শব্দ শুনি এবং তারপরই সবকিছু এলোমেলো হয়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে আমরা ঘর থেকে বেরিয়ে আসি এবং দেখি অন্যান্য বাসিন্দারাও ঘর ছেড়ে পালাচ্ছে।”

পেট্রোনাস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা পাইপলাইনের গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে।

এছাড়া, অগ্নিনির্বাপক কর্মীরা আগুন নেভানোর চেষ্টা করছেন এবং খুব শীঘ্রই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে। সতর্কতা হিসেবে, ঘটনার কাছাকাছি থাকা তিনটি গ্যাস স্টেশন সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

পেট্রোনাস আরও জানিয়েছে, তারা দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে কাজ শুরু করেছে।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *