মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট এমএইচ৩৭০, যা এক দশক আগে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল, সেটির অনুসন্ধানের জন্য পুনরায় অভিযান শুরু করতে যাচ্ছে মালয়েশিয়া সরকার। সম্প্রতি, দেশটির মন্ত্রিসভা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি সমুদ্র প্রযুক্তি কোম্পানি, ওশান ইনফিনিটির সাথে একটি চুক্তিতে সম্মত হয়েছে।
এই কোম্পানিটি অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে সমুদ্রের গভীরে অনুসন্ধান চালাবে।
২০১৪ সালে কুয়ালালামপুর থেকে বেইজিং যাওয়ার পথে ২২৭ জন যাত্রী এবং ১২ জন ক্রু নিয়ে এমএইচ৩৭০ ফ্লাইটটি নিখোঁজ হয়। বিমানটি দক্ষিণ ভারত মহাসাগরে বিধ্বস্ত হয়েছে বলে ধারণা করা হয়।
আধুনিক বিমান চলাচলের ইতিহাসে এটি একটি অন্যতম বৃহৎ রহস্য। মালয়েশিয়ার পরিবহনমন্ত্রী, অ্যান্থনি লোক, জানিয়েছেন যে মন্ত্রিসভা ওশান ইনফিনিটির সাথে চুক্তির শর্তাবলীতে অনুমোদন দিয়েছে।
এর আগে, কোম্পানিটি বিমানের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে বের করার জন্য আরও দুটি অনুসন্ধান পরিচালনা করেছিল।
নতুন এই অনুসন্ধানে প্রায় ১৫,০০০ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে তল্লাশি চালানো হবে। এর আগে, মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়া এবং চীন যৌথভাবে ১,২০,০০০ বর্গকিলোমিটার এলাকায় অনুসন্ধান চালিয়েছিল, তবে কোনো ফল পাওয়া যায়নি।
নতুন অনুসন্ধানে ‘নো ফাইন্ড, নো ফি’ নীতি অনুসরণ করা হবে, অর্থাৎ ধ্বংসাবশেষ খুঁজে না পাওয়া গেলে কোম্পানি কোনো অর্থ পাবে না।
অনুসন্ধানের জন্য কোম্পানিটিকে প্রায় ৭ কোটি মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় আনুমানিক ৭০০ কোটি টাকার বেশি) পরিশোধ করা হবে।
ফ্লাইটটি নিখোঁজ হওয়ার পর, তদন্তকারীরা বিমানের যোগাযোগ ব্যবস্থা উড্ডয়নের এক ঘণ্টার মধ্যেই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল বলে জানতে পারেন।
এরপর সামরিক রাডার থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, বিমানটি মালয়েশিয়ার ওপর দিয়ে ফিরে আসে এবং সুমাত্রার দিকে মোড় নেয়।
ঘটনার পর, বিভিন্ন দেশ সম্মিলিতভাবে উদ্ধার অভিযান চালালেও কোনো সাফল্য আসেনি।
এরপর মালয়েশিয়া সরকার ঘোষণা করে যে বিমানের জ্বালানি শেষ হওয়ার পরেই সেটি ভারত মহাসাগরের গভীরে বিধ্বস্ত হয়।
নিখোঁজ যাত্রীদের পরিবারের সদস্যরা মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্স, বোয়িং, বিমানের ইঞ্জিন প্রস্তুতকারক রোলস-রয়েস এবং অ্যালিয়েন্স ইন্স্যুরেন্স গ্রুপের কাছে ক্ষতিপূরণ চেয়েছেন।
এই ঘটনার পর থেকে, ভারত মহাসাগরের বিভিন্ন উপকূল এবং দ্বীপে বিমানের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে।
এই নতুন অনুসন্ধান অভিযানটি পরিবারগুলোর জন্য কিছুটা হলেও সান্ত্বনা বয়ে আনবে এবং তাদের প্রতীক্ষার অবসান ঘটাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা