এমএইচ৩৭০: মালয়েশিয়ার ঘোষণায় ফের শোক, রহস্যে ঘেরা বিমানটির কি হবে?

মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের নিখোঁজ বিমান এমএইচ৩৭০-এর অনুসন্ধান আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। দেশটির পরিবহন মন্ত্রী জানিয়েছেন, প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে এই মুহূর্তে অনুসন্ধান চালানো সম্ভব হচ্ছে না।

তবে, বছরের শেষের দিকে আবার তল্লাশি অভিযান শুরু করা হবে। ২০১৪ সালে কুয়ালালামপুর থেকে বেইজিং যাওয়ার পথে বিমানটি নিখোঁজ হয়। এতে ২২৭ জন যাত্রী এবং ১২ জন ক্রু ছিলেন।

বোয়িং ৭৭৭ বিমানটি মালয়েশিয়া থেকে চীনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করার কিছুক্ষণ পরেই রাডার থেকে অদৃশ্য হয়ে যায়। এরপর বহুবার এর খোঁজে অভিযান চালানো হলেও, এখন পর্যন্ত বিমানের কোনো ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এই ঘটনা বিশ্বজুড়ে বিমান চলাচলের ইতিহাসে অন্যতম রহস্য হিসেবে আজও পরিচিত। অস্ট্রেলিয়ার নেতৃত্বে একটি দল ভারত মহাসাগরের বিশাল এলাকায় তিন বছর ধরে তল্লাশি চালিয়েছিল। কিন্তু তেমন কোনো ফল পাওয়া যায়নি, কেবল কিছু ধ্বংসাবশেষ ছাড়া।

যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যভিত্তিক সমুদ্র অনুসন্ধান সংস্থা ওশান ইনফিনিটি ২০১৮ সালে একটি অনুসন্ধান চালায়, কিন্তু সেটিও সফল হয়নি। এরপর চলতি বছর তারা আবার অনুসন্ধানে রাজি হয়।

তাদের সর্বশেষ অভিযানটি ‘যদি না পাওয়া যায়, তবে কোনো ফি নয়’ – এই নীতির ওপর ভিত্তি করে পরিচালিত হচ্ছিল। অর্থাৎ, বিমানটি খুঁজে না পাওয়া গেলে মালয়েশিয়া সরকার কোনো অর্থ পরিশোধ করবে না।

মালয়েশিয়ার পরিবহন মন্ত্রী বলেছেন, বিমানটির সন্ধান মিলবে কিনা, তা এখনই বলা সম্ভব নয়। বিমানটির নিখোঁজ হওয়ার কারণ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে নানা ধরনের তত্ত্ব দেওয়া হয়েছে।

এর মধ্যে পাইলট জাহারি আহমেদ শাহের জড়িত থাকার সম্ভাবনাও কেউ কেউ উল্লেখ করেছেন। ২০১৮ সালের একটি চূড়ান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, বিমান ট্রাফিক কন্ট্রোলের কিছু দুর্বলতা ছিল এবং বিমানের গতিপথ ম্যানুয়ালি পরিবর্তন করা হয়েছিল।

তবে, তদন্তকারীরা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত করতে পারেননি যে, কেন বিমানটি হঠাৎ করে নিখোঁজ হয়েছিল।

এদিকে, বিমানের যাত্রীদের পরিবারের সদস্যরা এখনো মালয়েশীয় কর্তৃপক্ষের কাছে ঘটনার সঠিক কারণ জানতে চান। নিহত যাত্রীদের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশ ছিলেন চীনা নাগরিক।

এছাড়াও, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, অস্ট্রেলিয়া এবং অন্যান্য দেশের নাগরিকরাও ছিলেন। বিমানের নিখোঁজ হওয়ার ১১ বছর পূর্তিতে, গত মাসে চীনের যাত্রীদের পরিবারের সদস্যরা বেইজিংয়ে মালয়েশীয় দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করেন।

তারা তাদের স্বজনদের ফেরত চেয়ে স্লোগান দেন এবং তাদের অপেক্ষার অবসান দাবি করেন।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *