গ্রিসের সামোস দ্বীপে আশ্রয়প্রার্থী শিশুদের মধ্যে অপুষ্টির ঘটনা উদ্বেগ বাড়িয়েছে। আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস (এমএসএফ) জানিয়েছে, সেখানকার একটি শরণার্থী শিবিরে সিরিয়া ও আফগানিস্তান থেকে আসা ছয়জন শিশুর মারাত্মক অপুষ্টি ধরা পড়েছে।
শিশুদের বয়স ছয় মাস থেকে ছয় বছরের মধ্যে। সংস্থাটি বলছে, শিশুদের জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসা প্রয়োজন।
এমএসএফের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, অপুষ্টির শিকার শিশুদের শিবিরে বসবাসের কারণে এই অবস্থা হয়েছে কিনা, তা তারা নিশ্চিত করতে পারেননি। তবে তাদের মতে, শিবিরে খাদ্য ও স্বাস্থ্যসেবার অভাব শিশুদের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করছে।
এমএসএফ গ্রিসের প্রধান ক্রিস্তিনা পার্সা এক বিবৃতিতে বলেন, “কোনো শিশুরইSystematic অবহেলার কারণে অপুষ্টিতে ভোগা উচিত নয়।
তিনি দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
জানা গেছে, শরণার্থী শিবিরটিতে বসবাসকারী প্রায় এক-চতুর্থাংশ শিশু। তবে গ্রিসের অভিবাসন ও আশ্রয় বিষয়ক মন্ত্রণালয় অপুষ্টি ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছে।
তাদের দাবি, এটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আশ্রয়প্রার্থীদের প্রতিদিন তিন বেলা খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে।
২০১৫-১৬ সালের ইউরোপের শরণার্থী সংকটের সময় গ্রিস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকা থেকে আসা শরণার্থীদের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ গ্রিসে পৌঁছেছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে নির্মিত সামোস শরণার্থী শিবিরটি ২০২১ সালে খোলা হয়। এটি মূলত একটি সুরক্ষিত স্থান, যা কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ঘেরা।
এর আগে এখানে অতিরিক্ত জনাকীর্ণ একটি ক্যাম্পে ৭,০০০ মানুষ মানবেতর জীবন যাপন করত।
মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ইতোমধ্যেই সেখানকার পরিবেশকে অমানবিক ও অবমাননাকর বলে বর্ণনা করেছে। বিশেষ করে অতিরিক্ত ভিড়, জল সংকট এবং প্রয়োজনীয় সেবার অভাব নিয়ে তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক একজন বিশেষজ্ঞও শিবিরে যৌন নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিদের শনাক্ত করতে গ্রিসের ব্যর্থতার সমালোচনা করেছেন।
এমএসএফ গ্রিক কর্তৃপক্ষ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নকে আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য উপযুক্ত শিশু স্বাস্থ্যসেবা এবং পুষ্টি সহায়তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে।
এছাড়া, গত জুন মাস থেকে শরণার্থীদের জন্য স্থগিত করা আর্থিক সহায়তা পুনর্বহাল করারও দাবি জানিয়েছে তারা।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা