নিউ ইয়র্কের মেয়র পদের দৌড়ে থাকা একজন প্রার্থী, জহরান মামদানি, যিনি অতীতে পুলিশি ব্যবস্থা সংস্কারের পক্ষে কথা বলেছিলেন, সম্প্রতি এক পুলিশ অফিসারের মৃত্যুতে নতুন করে বিতর্কের মুখে পড়েছেন। নভেম্বরের নির্বাচনে জয়ী হলে তিনি কি পুলিশ বিভাগের সংস্কার করবেন, নাকি তার আগের অবস্থান বহাল রাখবেন, তা নিয়ে এখন আলোচনা চলছে।
গত সপ্তাহে ম্যানহাটনের একটি অফিসে বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত হন পুলিশ অফিসার দিদারুল ইসলাম। এই ঘটনার পর, মামদানীকে তার পুরনো ‘পুলিশের অর্থ হ্রাস’ (defund the police) সংক্রান্ত মন্তব্যের জন্য সমালোচনার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এই প্রসঙ্গে, তিনি জানিয়েছেন নির্বাচিত হলে তিনি পুলিশের অর্থ হ্রাস করার পরিবর্তে, কিভাবে পুলিশ বিভাগের কর্মদক্ষতা বাড়ানো যায় সেই বিষয়ে কাজ করবেন।
মামদানী, যিনি নিউ ইয়র্কের মেয়র পদের জন্য লড়ছেন, এর আগে ২০২০ সালে এক টুইট বার্তায় লিখেছিলেন, “আমরা সবাই জানি, নিউ ইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্ট (NYPD) বর্ণবাদী, কুইয়ার-বিরোধী এবং জনসাধারণের জন্য হুমকি স্বরূপ। তাই, আমাদের #DefundTheNYPD প্রয়োজন।”
এই ঘটনার পর, তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ, যেমন মেয়র এরিক অ্যাডামস এবং প্রাক্তন গভর্নর অ্যান্ড্রু কুওমো, এই সুযোগটি কাজে লাগিয়েছেন। তারা বলছেন, মামদানীর অতীতের এই ধরনের মন্তব্যের কারণে শহরের নিরাপত্তা ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে। তারা জনসাধারণের সুরক্ষার উপর বেশি জোর দিতে চাইছেন এবং পুলিশের সংখ্যা বাড়ানোর পক্ষে মত দিয়েছেন।
অন্যদিকে, মামদানী তার আগের মন্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়ে বলেছেন, জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর পরে অনেক নিউ ইয়র্কবাসীর মতোই তিনিও পুলিশের কার্যক্রম নিয়ে হতাশ ছিলেন। তিনি এখন মনে করেন, নিউ ইয়র্কবাসীকে নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচারের মধ্যে কোনো একটি বেছে নিতে বাধ্য করা উচিত নয়।
মামদানী বর্তমানে একটি “কমিউনিটি সেফটি বিভাগ” তৈরির প্রস্তাব করেছেন, যা মানসিক স্বাস্থ্য সংকটের মতো কিছু জরুরি অবস্থার মোকাবিলা করবে। এছাড়াও, তিনি এনওয়াইপিডির অতিরিক্ত সময়ের বাজেট কমানো এবং কর্মকর্তাদের গুরুতর অপরাধের প্রতি মনোযোগী করার কথা বলেছেন।
উল্লেখ্য, মামদানী নিউ ইয়র্কের বাংলাদেশি কমিউনিটির সঙ্গে গভীর সম্পর্ক রাখেন। অফিসার ইসলাম নিহত হওয়ার পর, তিনি তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাতে যান এবং তাদের প্রতি সম্মান জানান।
পুলিশের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার অনুষ্ঠানে প্রায়ই রাজনৈতিক বিতর্ক দেখা যায়। কয়েক বছর আগে, নিহত এক পুলিশ অফিসারের স্ত্রী ম্যানহাটন ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নিকে তার স্বামীর মৃত্যুর জন্য নরম মনোভাব দেখানোর অভিযোগ করেছিলেন। সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয়, সেদিকেও সকলের নজর রয়েছে।
আসন্ন মেয়র নির্বাচনে এই বিতর্ক কতদূর গড়ায় এবং এর ফল কি হয়, এখন সেটাই দেখার বিষয়।
তথ্য সূত্র: সিএনএন