নিউ ইয়র্ক সিটির আসন্ন মেয়র নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী জহরান মামদানি বিজয়ী হওয়ার পর সেখানকার বিলাসবহুল আবাসন খাতে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে।
বিভিন্ন সূত্রে খবর পাওয়া যাচ্ছে, এই জয়ের ফলে শহরের ধনী বাসিন্দাদের মধ্যে শহর ছেড়ে যাওয়ার প্রবণতা বাড়ছে।
জানা গেছে, ম্যানহাটানের কয়েকজন বড় বিনিয়োগকারী, যারা সেখানে কোটি ডলারের সম্পত্তি কেনার পরিকল্পনা করছিলেন, তারা তাদের সিদ্ধান্ত আপাতত স্থগিত করেছেন।
তাঁদের এই সিদ্ধান্তের পেছনে মূল কারণ হিসেবে কাজ করছে মামদানির কিছু নীতি, যা তাঁদের মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।
জহরান মামদানি, যিনি একজন ডেমোক্রেটিক সোস্যালিস্ট, নির্বাচনে জয়লাভের পর জানিয়েছেন, তিনি বার্ষিক ১০ লাখ ডলারের বেশি আয় করা নিউ ইয়র্কবাসীদের ওপর ২ শতাংশ হারে কর আরোপ করতে চান।
এছাড়া, তাঁর পরিকল্পনায় রয়েছে ভাড়াকরা অ্যাপার্টমেন্টের ভাড়া স্থিতিশীল রাখা, সরকারি আবাসন নির্মাণ ও সংস্কারের পরিমাণ বৃদ্ধি এবং বাড়িওয়ালাদের ওপর আরও কঠোর নজরদারি।
এই প্রস্তাবগুলো নিউ ইয়র্কের অভিজাত শ্রেণির মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে।
অনেক ধনী ব্যক্তি মনে করছেন, মামদানির এই নীতিগুলো তাঁদের জীবনযাত্রাকে কঠিন করে তুলবে।
তাই তাঁরা শহর ছাড়ার কথা ভাবছেন।
অন্যদিকে, ফ্লোরিডার রিয়েল এস্টেট এজেন্টরা এই পরিস্থিতিতে তাঁদের ব্যবসার প্রসার ঘটার সম্ভাবনা দেখছেন।
কোভিড-১৯ মহামারীর সময় নিউ ইয়র্ক থেকে প্রচুর মানুষ ফ্লোরিডায় পাড়ি জমিয়েছিলেন।
এবারও তেমন কিছু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে তাঁরা মনে করছেন।
বিশেষ করে পাম বিচ এলাকার এজেন্টরা জানাচ্ছেন, ইতিমধ্যেই নিউ ইয়র্কের অনেক ক্লায়েন্ট তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন, সেখানে বাড়ি কেনার বিষয়ে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।
আবাসন খাতের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদিও মামদানির প্রস্তাবগুলো এখনই বাস্তবায়িত নাও হতে পারে, কারণ মেয়র নির্বাচিত হলেও তাঁর নীতিগুলো সরাসরি কার্যকর করা সহজ নাও হতে পারে।
তার পরেও, এই বিষয়গুলো নিয়ে ধনী বাসিন্দাদের মধ্যে একটা অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে, যা সেখানকার আবাসন বাজারে প্রভাব ফেলছে।
এদিকে, নিউ ইয়র্কের রিয়েল এস্টেট বাজার এখন বেশ কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।
একদিকে, শহরের জীবনযাত্রার উচ্চ খরচ এবং ক্রমবর্ধমান ভাড়ার কারণে সাধারণ মানুষের টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে।
অন্যদিকে, উচ্চ মূল্যের ফ্ল্যাটগুলোতে বিনিয়োগকারীরাও তাঁদের বিনিয়োগের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত।
তথ্য সূত্র: সিএনএন