ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের আক্রমণভাগ: স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসন যুগের অবসানের পর থেকে কেমন ছিল চিত্র?
ফুটবল বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসনের কোচিং-এর অবসরের পর থেকে গত এক দশকে দলটির আক্রমণভাগে এসেছে অনেক পরিবর্তন। খেলোয়াড় পরিবর্তন হয়েছে, কিন্তু প্রত্যাশিত সাফল্য আসেনি।
আসুন, দেখা যাক কেমন ছিল সেই সময়ের চিত্র।
২০১৩ সালে স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসনের বিদায়ের পর থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত আক্রমণভাগে উল্লেখযোগ্য খেলোয়াড় ছিলেন:
- **ওয়েইন রুনি (২০১৩-২০১৭):** রুনি, যিনি একসময় ছিলেন দলের নির্ভরযোগ্য স্তম্ভ, ফার্গুসন পরবর্তী সময়েও দলের হয়ে খেলেছেন। এই সময়ে তিনি ৬৩টি ম্যাচে ২৬ গোল করেন।
- যদিও শুরুতে তার ফর্ম নিয়ে কিছুটা শঙ্কা ছিল, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সর্বকালের সেরা গোলদাতা হিসেবে নিজের স্থান ধরে রাখেন।
- **রবিন ভ্যান পার্সি (২০১৩-২০১৫):** রুনি’র সাথে আক্রমণভাগে আলো ছড়িয়েছিলেন ভ্যান পার্সি। এই ডাচ স্ট্রাইকার ২০১৩-১৫ পর্যন্ত ম্যান ইউ-এর হয়ে ৫২টি ম্যাচে ২৯টি গোল করেন।
- **ড্যানি ওয়েলব্যাক (২০১৩-২০১৪):** ওয়েলব্যাক ছিলেন একজন প্রতিশ্রুতিশীল খেলোয়াড়, যিনি ১৭টি ম্যাচে ৮টি গোল করেন। তবে, প্রথম মৌসুমের পরেই তিনি দল ছাড়েন।
- **জাভিয়ের হার্নান্দেজ (২০১৩-২০১৬):** হার্নান্দেজ, যিনি ‘চিচারিতো’ নামে পরিচিত, ফার্গুসনের অধীনে ভালো পারফর্ম করলেও পরবর্তী তিন বছরে মাত্র ৯টি গোল করতে পারেন।
এরপর দলে আসেন আরো কিছু খেলোয়াড়। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকজন হলেন:
- **রাডামেল ফ্যালকাও (২০১৪-২০১৫):** ফ্যালকাও একসময় বিশ্ব ফুটবলের পরিচিত মুখ ছিলেন। কিন্তু ইনজুরির কারণে তিনি প্রত্যাশিত পারফর্ম করতে পারেননি।
- **মারcus রাশফোর্ড (২০১৫-বর্তমান):** রাশফোর্ড এখনো দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। তিনি ১৪৩ ম্যাচে করেছেন ৫৫ গোল।
- **জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচ (২০১৬-২০১৮):** ইব্রাহিমোভিচ, যিনি একজন অভিজ্ঞ এবং পরিচিত স্ট্রাইকার, ম্যান ইউ-এর হয়ে খেলার সময় বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ গোল করেছেন।
- **রোমেলু লুকাকু (২০১৭-২০১৯):** লুকাকু’র আক্রমণভাগে খেলার অভিজ্ঞতা বেশ ভালো ছিল। তিনি ৯৬ ম্যাচে ৪২ গোল করেন।
এছাড়াও, এই সময়ে আরও কয়েকজন খেলোয়াড় ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের আক্রমণভাগে খেলেছেন। তাদের মধ্যে ছিলেন অ্যালেক্সিস সানচেজ, এডিনসন কাভানি, ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো, এবং সম্প্রতি আসা রাসমুস হোজলুন্দ। এদের পারফরম্যান্স দলটির প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি।
ফার্গুসন পরবর্তী সময়ে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের আক্রমণভাগে খেলোয়াড়দের আসা-যাওয়া লেগেই ছিল, কিন্তু ধারাবাহিক সাফল্যের অভাব ছিল স্পষ্ট। খেলোয়াড় বাছাই থেকে শুরু করে কৌশলগত পরিকল্পনা—অনেক কিছুই যেন তালগোল পাকিয়ে ফেলেছিল।
এখন দেখার বিষয়, বর্তমান সময়ে দলটি কিভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারে এবং হারানো গৌরব ফিরে পেতে পারে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান