ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের নতুন স্টেডিয়াম: ২ বিলিয়ন পাউন্ডের প্রকল্পে বিতর্ক!

**ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড: নতুন স্টেডিয়ামের জন্য কর ফাঁকির অভিযোগ, বিতর্কিত সরকারি অর্থায়ন**

বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় ফুটবল ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড (Manchester United) তাদের নতুন স্টেডিয়াম নির্মাণের পরিকল্পনা করছে। এই প্রকল্পে কয়েক’শ মিলিয়ন পাউন্ড সরকারি অর্থায়নের প্রস্তাব নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।

ক্লাবের সহ-মালিক স্যার জিম র‍্যাটক্লিফ (Sir Jim Ratcliffe) এই প্রকল্পের প্রধান উদ্যোক্তা। ব্রিটেনের বাইরে মোনাকোতে বসবাস করা র‍্যাটক্লিফকে কর ফাঁকির অভিযোগের সম্মুখীন হতে হচ্ছে।

**নতুন স্টেডিয়াম ও অর্থনৈতিক সম্ভাবনা**

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড কর্তৃপক্ষের দাবি, প্রস্তাবিত এই স্টেডিয়ামটি তৈরি হলে ২০৩৯ সাল নাগাদ যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিতে ৭.৩ বিলিয়ন পাউন্ডের বেশি যোগ হবে। স্টেডিয়ামটি শুধু খেলার মাঠ হিসেবেই নয়, বরং একটি আকর্ষণীয় স্থানে পরিণত হবে, যা প্যারিসের আইফেল টাওয়ারের মতো খ্যাতি অর্জন করতে পারে।

এই প্রকল্পের পরিকল্পনা অনুযায়ী, স্টেডিয়ামের চারপাশে একটি বিশাল এলাকা তৈরি করা হবে, যেখানে জনসাধারণের জন্য বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা থাকবে।

তবে, এই বিশাল অঙ্কের অর্থনৈতিক উন্নতির পেছনে স্টেডিয়ামের অবদান কতটুকু, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কিছু বিশেষজ্ঞের মতে, এই প্রকল্পের সিংহভাগ অর্থনৈতিক প্রভাব আসবে স্টেডিয়ামের বাইরের উন্নয়ন থেকে, যেখানে জনসাধারণের জন্য সুযোগ-সুবিধা তৈরি করা হবে।

**বিতর্কের কারণ: সরকারি অর্থায়ন ও র‍্যাটক্লিফের কর ব্যবস্থা**

সবচেয়ে বড় বিতর্ক তৈরি হয়েছে এই প্রকল্পে সরকারি অর্থায়নের প্রস্তাব নিয়ে। বিরোধী পক্ষের অভিযোগ, র‍্যাটক্লিফ যেহেতু কর ফাঁকি দিতে যুক্তরাজ্য ছেড়ে মোনাকোতে বসবাস করছেন, তাই তার ব্যবসায়িক স্বার্থে জনগণের ট্যাক্সের টাকা ব্যবহার করা উচিত নয়।

লেবার পার্টির এমপি গ্রাহাম স্ট্রিংগার (Graham Stringer) এই প্রস্তাবকে ‘কর ফাঁকিবাজের অপরিকল্পিত প্রকল্প’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তার মতে, এই অর্থ বৃহত্তর ম্যানচেস্টারের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ খাতে ব্যবহার করা যেত।

অন্যদিকে, গ্রেটার ম্যানচেস্টার মেয়র অ্যান্ডি বার্নহাম (Andy Burnham) এবং প্রাক্তন অ্যাথলেটিক ব্যক্তিত্ব সেবাস্টিয়ান কোয়ে (Sebastian Coe) এই প্রকল্পের পক্ষে সমর্থন জানিয়েছেন।

তাদের মতে, এই প্রকল্পের মাধ্যমে অবকাঠামো তৈরি হবে এবং বেসরকারি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা যাবে, যা এলাকার উন্নয়নে সহায়তা করবে।

**স্থানীয়দের প্রত্যাশা ও ক্লাবের ভূমিকা**

স্থানীয় কাউন্সিলর ওয়াসিম হাসান (Waseem Hassan) এই প্রকল্পের প্রতি সমর্থন জানালেও, স্থানীয় বাসিন্দারা চান ক্লাবটি যেন এলাকার উন্নয়নে আরও বেশি অবদান রাখে।

তাদের প্রত্যাশা, ক্লাবটি যেন স্কুল, অবকাঠামো এবং পরিবেশের উন্নতিতে সহায়তা করে।

বর্তমানে, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের মালিকানার বড় অংশ এখনো গ্লেজার পরিবারের হাতে, যারা যুক্তরাষ্ট্রের শপিং সেন্টার থেকে তাদের ব্যবসা শুরু করেছিলেন।

তবে, খেলার দিকের সব দায়িত্ব এখন র‍্যাটক্লিফের হাতে।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *