ম্যানচেস্টার সিনাগগে রক্তাক্ত হামলা: ৬ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ, স্তম্ভিত বিশ্ব

ম্যানচেস্টারে সিনাগগে হামলায় জড়িত সন্দেহে ৬ জন আটক।

যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টারে একটি সিনাগগে (ইহুদি উপাসনালয়) হামলার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ছয়জনকে আটক করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (গতকাল) শহরটির হিটন পার্ক কনগ্রিগেশন সিনাগগের বাইরে এই হামলার ঘটনা ঘটে, যেখানে দুই জন নিহত হয়েছেন।

ব্রিটিশ ইহুদি সম্প্রদায় এই ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছে।

আটককৃতদের মধ্যে তিনজন পুরুষ এবং তিনজন নারী রয়েছেন। তাদের বয়স ১৮ থেকে ৬০ এর মধ্যে।

সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে বৃহত্তর ম্যানচেস্টার এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, হামলার মূল হোতা ছিলেন ৩৫ বছর বয়সী জিহাদ আল-শামি। তিনি সিরীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক ছিলেন এবং ম্যানচেস্টারে বসবাস করতেন।

হামলার দিন তিনি একটি গাড়ি নিয়ে পথচারীদের ধাক্কা দেন এবং তাদের ওপর ছুরি নিয়ে হামলা চালান। এরপর তিনি সিনাগগে প্রবেশের চেষ্টা করেন।

পরে পুলিশের গুলিতে তার মৃত্যু হয়।

এই হামলায় সিনাগগের সদস্য ৬৬ বছর বয়সী মেলভিন ক্রাভিজ এবং ৫৩ বছর বয়সী অ্যাড্রিয়ান ডলবি নিহত হন।

ঘটনার সময় অ্যাড্রিয়ানকে ভুল করে গুলি করেন এক পুলিশ সদস্য। গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন আরও তিনজন।

পুলিশের ধারণা, জিহাদ আল-শামি ‘চরম ইসলামপন্থী আদর্শে’ অনুপ্রাণিত হয়ে এই হামলা চালিয়ে থাকতে পারেন।

হামলার সময় তার পরনে বিস্ফোরক বেল্ট সদৃশ কিছু দেখা গেলেও, পরে সেটি নকল প্রমাণিত হয়।

এই হামলার পর ব্রিটেনে ইহুদি বিদ্বেষ (অ্যান্টি-সেমিটিজম) নিয়ে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে।

বিশেষ করে, ইসরায়েল-হামাস সংঘাতের প্রেক্ষাপটে এই বিদ্বেষ আরও বাড়ছে বলে মনে করা হচ্ছে।

কমিউনিটি সিকিউরিটি ট্রাস্ট (সিএসটি)-এর মতে, গত ৭ অক্টোবর হামাস কর্তৃক ইসরায়েলে হামলার পর থেকে যুক্তরাজ্যে ইহুদি বিদ্বেষের ঘটনা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।

গাজা যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ফিলিস্তিনিপন্থী বিক্ষোভগুলো নিয়মিত অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

যদিও এই বিক্ষোভগুলো সাধারণত শান্তিপূর্ণ ছিল, তবে কিছু ক্ষেত্রে ‘নদী থেকে সমুদ্র পর্যন্ত, ফিলিস্তিন স্বাধীন হবে’ শ্লোগানের মাধ্যমে ইহুদিদের প্রতি ঘৃণা ছড়ানো হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

ব্রিটিশ সরকার গত মাসে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।

অনেকে মনে করেন, এর ফলে ইহুদি বিদ্বেষ আরও বাড়তে পারে। যদিও সরকার এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।

এই ঘটনার পর, লন্ডনে শনিবার একটি বিক্ষোভ কর্মসূচি বাতিল করার জন্য কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।

বিক্ষোভটি ছিল ‘প্যালেস্টাইন অ্যাকশন’ নামক একটি গোষ্ঠীর ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির প্রতিবাদে।

সরকার এই গোষ্ঠীটিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *