ম্যানচেস্টার/ঢাকা – আবারও একটি শোকের ছায়া নেমে এসেছে ইংল্যান্ডের ম্যানচেস্টার শহরে। সম্প্রতি শহরের একটি সিনাগগে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত দুইজন, আহত হয়েছেন আরও অনেকে। এই ঘটনায় পুরো শহরজুড়ে নেমে এসেছে গভীর শোকের আবহ।
কর্তৃপক্ষ এটিকে একটি সন্ত্রাসী হামলা হিসেবে চিহ্নিত করেছে। বৃহস্পতিবারের এই হামলার স্মৃতি এখনো তাজা থাকতে না থাকতেই, শহরবাসী যেন আবারও ফিরে গেছেন বিভীষিকাময় অতীতে।
২০১৭ সালে ম্যানচেস্টার এরিনাতে এক কনসার্টে আত্মঘাতী বোমা হামলায় নিহত হয়েছিল ২২ জন, যাদের মধ্যে ছিল শিশুরাও। ১৯৯০ এর দশকে আইরিশ রিপাবলিকান আর্মি (আইআরএ) ম্যানচেস্টারে বোমা হামলা চালিয়েছিল, যার ক্ষত আজও বহন করে চলেছে শহরটি।
কিন্তু বারবার আঘাত হানলেও, ম্যানচেস্টারের মানুষ হার মানতে নারাজ। শোকের এই সময়েও তারা তাদের ঐক্যবদ্ধ মানসিকতার প্রমাণ দিয়েছে। হামলার পর পরই স্থানীয় মানুষজন আহতদের সাহায্যার্থে এগিয়ে আসে এবং নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সমবেত হয়।
গ্রেটার ম্যানচেস্টারের মেয়র অ্যান্ডি বার্নহাম এই ঘটনার পর বলেছেন, “আমাদের একজনের ওপর আক্রমণ মানে আমাদের সবার ওপর আক্রমণ।
শহরের ফুটবল দল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড এবং ম্যানচেস্টার সিটি’র খেলোয়াড়রা নিহতদের প্রতি সম্মান জানিয়ে খেলার আগে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন। খেলোয়াড়েরা কালো আর্মব্যান্ড পরে মাঠে নামেন।
ম্যানচেস্টার সিটির ম্যানেজার পেপ গার্দিওলা, যিনি নিজেও এরিনা বোমা হামলার প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন, শোকাহত পরিবারগুলোর প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন।
ম্যানচেস্টারের মানুষের এই ঘুরে দাঁড়ানোর মানসিকতা সবসময়ই প্রশংসিত হয়েছে। শহরের ‘ওয়ার্কার বি’ প্রতীকটি, যা সেখানকার মানুষের ঐক্য ও সংহতির প্রতীক হিসেবে পরিচিত, আবারও নতুন করে গুরুত্ব পেয়েছে।
এই শহরের মানুষ তাদের কঠিন সময়েও একে অপরের পাশে দাঁড়িয়েছে, যা বিশ্বজুড়ে অন্যান্য সন্ত্রাসী হামলার শিকার হওয়া মানুষদের কাছেও দৃষ্টান্তস্বরূপ। এই ঘটনার পর শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শোক প্রকাশ করা হয়েছে এবং নিহতদের আত্মার শান্তি কামনা করা হয়েছে।
স্থানীয় একটি দাতব্য সংস্থার নির্বাহী পরিচালক ডেব্রা গ্রিন বলেছেন, “আমরা শুধু প্রতিবাদ জানাতে চাই না, আমরা ভালোবাসার মাধ্যমে এই শোকের জবাব দিতে চাই।
তথ্যসূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস