ম্যানহাটনে ভয়াবহ বন্দুক হামলা: আতঙ্কের সেই মুহূর্ত!

ম্যানহাটনের একটি বহুতল ভবনে বন্দুকধারীর হামলায় নিহত ৪, হতবাক বিশ্ব।

নিউ ইয়র্ক সিটির প্রাণকেন্দ্র ম্যানহাটনে অবস্থিত একটি অফিসে গত সোমবার সন্ধ্যায় এক বন্দুকধারীর হামলায় চারজন নিহত হয়েছেন। ব্যস্ত সময়ে পার্ক অ্যাভিনিউয়ের একটি বহুতল ভবনে এই নৃশংস ঘটনা ঘটে, যা পুরো বিশ্বকে স্তম্ভিত করে দিয়েছে।

নিহতদের মধ্যে একজন নিউ ইয়র্ক সিটি পুলিশ ডিপার্টমেন্টের (এনওয়াইপিডি) সদস্যও রয়েছেন। হামলাকারী নিজেও পরে আত্মহত্যা করে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণ অনুযায়ী, হামলাকারী প্রথমে ভবনের লবিতে প্রবেশ করে এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পরে।

ঘটনার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই এনওয়াইপিডি দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে তল্লাশি অভিযান শুরু করে।

তদন্তে জানা গেছে, হামলাকারীর নাম শেন ডেভন তামুরা, বয়স ২৭ বছর এবং তিনি লাস ভেগাসের বাসিন্দা ছিলেন।

ঘটনার কয়েক দিন আগে তিনি নিউ ইয়র্ক এসেছিলেন এবং হামলার উদ্দেশ্যে পার্ক অ্যাভিনিউয়ের ওই ভবনটি বেছে নেন।

পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, হামলাকারী সম্ভবত ন্যাশনাল ফুটবল লীগ (এনএফএল)-এর অফিসের দিকে যাচ্ছিল, তবে ভুল করে অন্য একটি ফ্লোরে প্রবেশ করে।

তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, তামুরা একটি এম৪ আধা-স্বয়ংক্রিয় রাইফেল ব্যবহার করেছিলেন।

হামলার আগে তিনি একটি ব্ল্যাক বিএমডব্লিউ গাড়িতে করে ঘটনাস্থলে আসেন।

পুলিশের ধারণা, হামলার পরিকল্পনা আগে থেকেই করা হয়েছিল। হামলায় ব্যবহৃত অস্ত্র এবং অন্যান্য সরঞ্জাম তিনি কিভাবে সংগ্রহ করেছিলেন, সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানতে তদন্ত চলছে।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, গুলির শব্দ পাওয়ার পরেই অফিসের কর্মীরা নিজেদের রক্ষা করার জন্য অফিসের দরজা বন্ধ করে দেন এবং জরুরি বিভাগে ফোন করেন।

এই ঘটনার পর পুরো এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

নিহতদের মধ্যে এনওয়াইপিডি-র ৩৬ বছর বয়সী কনস্টেবল দিদারুল ইসলামও রয়েছেন, যিনি ঘটনার সময় দায়িত্ব পালন করছিলেন।

এছাড়া, অফিসের অন্যান্য কর্মীদের মধ্যে ছিলেন একজন নিরাপত্তা প্রহরী, একজন ব্ল্যাকস্টোন নির্বাহী এবং একজন কর্নেল গ্র্যাজুয়েট।

পুলিশ কমিশনার জেসিকা টিশ-এর নেতৃত্বে এনওয়াইপিডি-র সদস্যরা দ্রুততার সঙ্গে ঘটনার তদন্ত শুরু করেন।

তারা ভবনের ভেতরের এবং বাইরের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখেন এবং হামলাকারীর ছবি বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন।

লাস ভেগাস মেট্রো পুলিশ ডিপার্টমেন্টের সহায়তায় তামুরার অতীত রেকর্ড অনুসন্ধান করা হচ্ছে।

জানা গেছে, তার মানসিক স্বাস্থ্য নিয়েও কিছু সমস্যা ছিল। বন্দুকের লাইসেন্স এবং অস্ত্র কেনা সংক্রান্ত বিষয়েও তদন্ত চলছে।

এই ঘটনার পর, আমেরিকার বিভিন্ন স্থানে বন্দুক হামলার বিরুদ্ধে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য আলোচনা শুরু হয়েছে।

কর্তৃপক্ষ জনসাধারণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের কথা জানিয়েছে।

তথ্যসূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *