অ্যাটউডের সেরা বইগুলো: পাঠকদের চোখে!

মার্গারেট অ্যাটউড: দশটি অসাধারণ বই যা আপনাকে ভাবাবে

বিখ্যাত লেখিকা মার্গারেট অ্যাটউড, যিনি তাঁর শক্তিশালী লেখনীর মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে পরিচিত, নারী অধিকার, পরিবেশ এবং ভবিষ্যতের সমাজ নিয়ে তাঁর গভীর চিন্তাভাবনার জন্য সুপরিচিত। অ্যাটউডের লেখাগুলি শুধু সাহিত্য হিসেবেই গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং সময়ের দর্পণ হিসেবেও কাজ করে, যা আমাদের সমাজের নানা দিক তুলে ধরে।

তাঁর উল্লেখযোগ্য কাজগুলি নিয়ে আলোচনা করা হলো:

১. *দ্য হ্যান্ডমেডস টেল (The Handmaid’s Tale)* (১৯৮৫): অ্যাটউডের সবচেয়ে বিখ্যাত এই উপন্যাসটি একটি কাল্পনিক ভবিষ্যতের গল্প, যেখানে নারীদের উপর রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন চরম রূপ নেয়। বইটি নারীদের প্রজনন ক্ষমতাকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা একটি ধর্মীয় শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের কণ্ঠস্বর।

২. *ক্যাটস আই (Cat’s Eye)* (১৯৮৮): শৈশবকালে নারীত্বের জটিলতা এবং বন্ধুদের মধ্যেকার সম্পর্ক নিয়ে লেখা এই উপন্যাসটি। টরন্টোর একটি স্কুলে কাটানো সময়ের স্মৃতিচারণ, যেখানে লেখক ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাকে চমৎকারভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন।

৩. *অ্যালিয়াস গ্রেস (Alias Grace)* (১৯৯৬): উনিশ শতকের কানাডায় ঘটে যাওয়া একটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে রচিত এই উপন্যাসটি। গ্রেস মার্কস নামের এক নারীর দুটি হত্যাকাণ্ডের দায়ে অভিযুক্ত হওয়ার গল্প এটি।

৪. *দ্য ব্লাইন্ড অ্যাসাসিন (The Blind Assassin)* (২০০০): অ্যাটউডের একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ, যেখানে গল্পের মধ্যে গল্প এবং সময়ের বিভিন্ন স্তর ব্যবহার করা হয়েছে। এটি প্রেম, বিশ্বাসঘাতকতা এবং অতীতের রহস্য উন্মোচনের এক অসাধারণ আখ্যান। এই বইটির জন্য তিনি বুকার পুরস্কার লাভ করেন।

৫. *ওরিক্স অ্যান্ড ক্রেক (Oryx and Crake)* (২০০৩): অ্যাটউডের লেখা একটি ভবিষ্যৎ-বিষয়ক উপন্যাস, যেখানে পরিবেশগত বিপর্যয় এবং প্রযুক্তির অপব্যবহারের ধারণা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। এই বইয়ে Snowman নামের একজন মানুষের বেঁচে থাকার গল্প বলা হয়েছে, যে সম্ভবত মানবজাতির শেষ প্রতিনিধি।

৬. *বার্নিং কোয়েশ্চনস: এসেজ় ২০04-২০২১ (Burning Questions: Essays 2004-2021)* (২০২২): এই সংকলনে অ্যাটউডের সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে লেখা প্রবন্ধগুলো স্থান পেয়েছে। পরিবেশ, গণতন্ত্র এবং নারী অধিকারের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো এখানে আলোচনা করা হয়েছে।

৭. *দ্য টেস্টামেন্টস (The Testaments)* (২০১৯): *দ্য হ্যান্ডমেডস টেল*-এর বহু প্রতীক্ষিত সিক্যুয়েল, যেখানে আগের কাহিনীর অনেক বছর পরের ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে। এই বইটিও বুকার পুরস্কার জিতেছে।

৮. *হ্যাগ-সিড (Hag-Seed)* (২০১৬): শেক্সপিয়ারের *দ্য টেম্পেস্ট*-এর আধুনিক রূপান্তর। প্রতিশোধ, শোক এবং সৃজনশীলতার এক অসাধারণ মিশ্রণ এই উপন্যাস।

৯. *দ্য এডিবল ওম্যান (The Edible Woman)* (১৯৬৯): অ্যাটউডের প্রথম উপন্যাস, যেখানে নারী স্বাধীনতা এবং সমাজের বিভিন্ন দিক নিয়ে ব্যঙ্গাত্মক আলোচনা করা হয়েছে।

১০. *পেপার বোট: নিউ অ্যান্ড সিলেক্টেড পোয়েমস ১৯৬১-২০২৩ (Paper Boat: New and Selected Poems 1961-2023)*: অ্যাটউডের কবিতার এক বিশাল সংগ্রহ, যেখানে তাঁর দীর্ঘ সাহিত্যজীবনের প্রতিফলন ঘটেছে।

মার্গারেট অ্যাটউডের লেখাগুলি শুধু গল্প নয়, বরং গভীর চিন্তাভাবনার প্রতিফলন। তাঁর বইগুলো পাঠকদের সমাজের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে নতুনভাবে ভাবতে উৎসাহিত করে।

অ্যাটউডের কাজের মাধ্যমে আমরা ভবিষ্যতের সম্ভাবনা ও বিপদ সম্পর্কে সচেতন হতে পারি।

তথ্য সূত্র: The Guardian

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *