ফ্রান্সের রাজনীতিক মেরিন ল্য পেন-এর বিরুদ্ধে আনা দুর্নীতির অভিযোগের রায় ঘিরে বর্তমানে তোলপাড় চলছে। ইউরোপীয় পার্লামেন্টের তহবিল তছরূপের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর তাকে নির্বাচনে অংশগ্রহণে নিষিদ্ধ করা হয়েছে, যা ২০২৭ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তার অংশগ্রহণের স্বপ্নে বড় ধাক্কা দিয়েছে।
এই রায়ের বিরুদ্ধে মেরিন ল্য পেন ও তার সমর্থকরা প্যারিসের রাস্তায় নেমে এসে বিক্ষোভ করেছেন।
মেরিন ল্য পেনের দল ন্যাশনাল র্যালি এই রায়কে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আখ্যা দিয়ে একে ‘ডাইনি শিকার’ হিসেবে অভিহিত করেছে। তারা এটিকে গণতন্ত্রের উপর সরাসরি আঘাত এবং ফরাসি জনগণের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা বলেও উল্লেখ করেছে।
ল্য পেন তার সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, “আমি হার মানব না।” বিক্ষোভ সমাবেশে আসা জনতাকে তিনি অনুপ্রেরণা যোগাতে আমেরিকার নাগরিক অধিকার আন্দোলনের নেতা মার্টিন লুথার কিং-এর উদাহরণ টেনে আনেন।
অন্যদিকে, বামপন্থী ও মধ্যপন্থী দলগুলো ল্য পেনের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে পাল্টা বিক্ষোভ করেছে। তারা আদালতের রায়ের প্রতি সমর্থন জানিয়ে ন্যাশনাল র্যালির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ডাক দিয়েছে।
ফ্রান্সের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রন এবং তার দল এই রায়কে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা রক্ষার দৃষ্টান্ত হিসেবে তুলে ধরেছেন। তারা মনে করেন, আদালত সম্পূর্ণ নিরপেক্ষভাবে এই রায় দিয়েছে।
মেরিন ল্য পেনের দলের শীর্ষস্থানীয় নেতা জর্ডান বারদেলা মনে করেন, এই রায়ের মূল উদ্দেশ্য হলো ল্য পেনকে ২০২৭ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থেকে দূরে রাখা।
এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন অনেকে। প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই নিষেধাজ্ঞাকে ‘বামপন্থীদের ষড়যন্ত্র’ হিসেবে অভিহিত করেছেন এবং ল্য পেনের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন।
মেরিন ল্য পেনের বিরুদ্ধে আনা এই অভিযোগের রায় ফ্রান্সের রাজনৈতিক অঙ্গনে গভীর প্রভাব ফেলেছে। অনেকেই মনে করছেন, এর ফলে দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নতুন মোড় নিতে পারে।
যদিও ল্য পেন এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার ঘোষণা দিয়েছেন, তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে এর ফলস্বরূপ ২০২৭ সালের নির্বাচনে তার অংশগ্রহণে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা