ফ্রান্সের রাজনীতিতে নতুন মোড়, মেরিন লে পেনের ভবিষ্যৎ কী?
ফ্রান্সের রাজনীতির আকাশে এখন আলোচনার ঝড়। কট্টর-ডানপন্থী নেতা মেরিন লে পেনকে পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে।
এই সিদ্ধান্তের ফলে ২০২৭ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তার অংশগ্রহণের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। তবে এই ঘটনার পর ফ্রান্সের রাজনীতিতে কি কোনো পরিবর্তন আসবে, নাকি মেরিন লেপেনের দল ন্যাশনাল র্যালি (RN) আরো শক্তিশালী হবে?
মেরিন লেপেনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ছিল, যার ফলস্বরূপ আদালত তাকে এই শাস্তি দেয়।
অনেকে মনে করছেন, এই রায় রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তারা এটিকে গণতন্ত্রের ওপর আঘাত হিসেবে দেখছেন।
মেরিন লেপেন নিজেও এই রায়কে ‘জনগণের ইচ্ছার’ বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
অন্যদিকে, মেরিন লেপেনের দল ন্যাশনাল র্যালির সমর্থকেরা মনে করেন, তাদের দলের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে চক্রান্ত চলছে।
তাদের মতে, এই রায়ের মাধ্যমে তাদের দল এবং নেত্রীকে দমিয়ে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে।
তবে অনেকের মতে, এই ঘটনার ফলে দলের মধ্যে নতুন নেতৃত্ব আসার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
মেরিন লেপেনের অনুপস্থিতিতে দলের নেতৃত্ব দেবেন জর্দান বারদেলা।
তিনি মেরিন লেপেনের মনোনীত উত্তরসূরি। বারদেলা তরুণ এবং দলের কর্মীদের কাছে বেশ জনপ্রিয়।
অনেকের মতে, তিনি দলের ভাবমূর্তি পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন।
কিন্তু তার রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা তুলনামূলকভাবে কম।
এখন দেখার বিষয়, লেপেনের অনুপস্থিতিতে বারদেলা দলের হাল ধরতে পারেন কিনা।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, মেরিন লেপেনের এই ‘রাজনৈতিক মৃত্যু’ হয়তো দলের জন্য নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে।
কারণ, বারদেলাকে দলের প্রধান হিসেবে তুলে ধরার ফলে দলের পুরোনো ভাবমূর্তি অনেকটাই পরিবর্তন করা যাবে।
অন্যদিকে, মেরিন লেপেনের এই বিদায় অন্যান্য রাজনৈতিক নেতাদের জন্য সুযোগ তৈরি করতে পারে।
মেরিন লেপেনের ভাইঝি মারিওন মারেচাল এবং আরো কয়েকজন অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ এই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেন।
এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হলো, মেরিন লেপেনের দল কি তার নাম ছাড়া নির্বাচনে আগের মতো সমর্থন ধরে রাখতে পারবে?
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ন্যাশনাল র্যালির ভোটাররা দলের প্রতি খুবই অনুগত।
তারা তাদের দলের প্রতি সবসময় সমর্থন দিয়ে এসেছেন।
তবে লেপেনের অনুপস্থিতিতে বারদেলা সেই সমর্থন ধরে রাখতে পারবেন কিনা, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
ন্যাশনাল র্যালির সামনে এখন অনেক চ্যালেঞ্জ।
দলের প্রধান হিসেবে বারদেলার ওপর এখন অনেক দায়িত্ব।
একদিকে যেমন দলের পুরনো ভোটারদের ধরে রাখতে হবে, তেমনি নতুন ভোটারদের আকৃষ্ট করারও চেষ্টা করতে হবে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, মেরিন লেপেনের এই ঘটনা ফ্রান্সের রাজনীতিতে একটি বড় পরিবর্তন আনতে পারে।
এখন দেখার বিষয়, এই পরিবর্তনের ফলে দেশটির রাজনৈতিক অঙ্গনে কী ধরনের প্রভাব পড়ে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন