বদলে যাওয়া ফুটবল: ক্যালদেন্তের চোখে নারী ফুটবলের ভবিষ্যৎ!

স্প্যানিশ ফুটবল তারকা মারিওনা ক্যালডেন্টেই এখন আর্সেনালের হয়ে মাঠ মাতাচ্ছেন। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি নারী ফুটবলের উন্নতি, খেলোয়াড় জীবনের নানা অভিজ্ঞতা এবং মাঠের বাইরের কিছু ঘটনার কথা তুলে ধরেছেন। বার্সেলোনার হয়ে এক দশক খেলার পর তিনি যোগ দিয়েছেন আর্সেনালে।

ক্যালডেন্টেইয়ের বেড়ে ওঠা স্পেনের মায়োর্কাতে। ছোটবেলায় বাড়ির জানালা দিয়ে ক্যাম্প ন্যু স্টেডিয়ামের স্কোরবোর্ড দেখতেন তিনি। বন্ধুদের সঙ্গে মিলে খেলতেন, কিন্তু পেশাদার ফুটবলে আসার কথা কোনোদিন ভাবেননি। সেই তিনিই এখন বিশ্ব ফুটবলে পরিচিত এক নাম।

২০২২ সালে, বার্সেলোনার হয়ে খেলার সময়, ৯১,৬৪৮ জন দর্শক খেলা দেখতে এসেছিলেন, যা ছিল এক বিশ্ব রেকর্ড। ক্যালডেন্টেই বলেন, “তখন এত দ্রুত সবকিছু ঘটছিল যে, এখন মনে হয়, আমরা আসলে কত বড় একটা পরিবর্তন এনেছিলাম, সেটা হয়তো এখনো পুরোপুরি উপলব্ধি করতে পারিনি।”

বার্সেলোনার হয়ে খেলার দিনগুলোতে তাঁর সতীর্থ ছিলেন ভার্জিনিয়া টোরেসিলা, অ্যালেক্সিয়া পুটেলাস, এবং আরও অনেকে। তাদের হাত ধরেই বার্সেলোনা নারী দল ইতিহাসের সেরা দলগুলোর একটি হয়ে ওঠে। গত মৌসুমে তারা একসঙ্গে চারটি শিরোপা জেতে।

ক্যালডেন্টেইয়ের মতে, বার্সেলোনা ক্লাবটি ২০১৫ সালে নারী ফুটবলকে পেশাদারিত্বের দিকে নিয়ে যায়। তারা লীগ জিততে কয়েক বছর ব্যর্থ হলেও, ক্লাব তাদের সমর্থন জুগিয়ে গিয়েছিল।

ক্যালডেন্টেই মনে করেন, নারী ফুটবলকে যদি সঠিকভাবে দেখাশোনা করা হয়, তাহলে এটি লাভজনকও হতে পারে। এর প্রমাণ হিসেবে তিনি বার্সেলোনার সাফল্যের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ক্লাবটি এখন একমাত্র দল, যারা লোকসান ছাড়াই ব্যবসা করতে পারছে।

তবে স্প্যানিশ ফুটবলে একটি বিতর্কিত অধ্যায়ও রয়েছে। ২০২৩ সালে, ১৫ জন স্প্যানিশ খেলোয়াড়, ক্যালডেন্টেই সহ, জাতীয় দলের হয়ে খেলতে অস্বীকৃতি জানান। তাঁদের অভিযোগ ছিল ফেডারেশনের প্রতি। পরে অবশ্য তাঁদের মধ্যে কয়েকজনকে বিশ্বকাপের জন্য দলে নেওয়া হয়।

বিশ্বকাপ জয়ের পর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে ফেডারেশন প্রধানের বিতর্কিত আচরণের কথা সবাই জানে। ক্যালডেন্টেই এই ঘটনার কথা উল্লেখ করে বলেন, বিশ্বকাপ জয়ের চেয়েও বেশি আলোচনা হয়েছিল এই ঘটনার।

আর্সেনালে যোগ দেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ক্যালডেন্টেই বলেন, এখানে খেলার ধরনটা ভিন্ন। এখানে খেলাটা আরও উন্মুক্ত, দ্রুতগতির এবং শারীরিক শক্তি বেশি প্রয়োজন হয়। তাঁর মতে, এই ধরনের ফুটবল তাঁর খেলোয়াড়ি জীবনকে আরও পরিপূর্ণতা দেবে।

তিনি আর্সেনালের হয়ে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে খেলার জন্য মুখিয়ে আছেন।

ক্যালডেন্টেই মনে করেন, ইংল্যান্ডে নারী ফুটবল খেলোয়াড়দের জন্য ভালো একটা পরিবেশ তৈরি হয়েছে। প্রতিটি স্টেডিয়ামে খেলা হয় এবং লিগটাও বেশ প্রতিযোগিতামূলক।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *