মারাক্কো: শহরের কাছেই এক অন্য জগৎ, যা বিস্মিত করবে!

মরক্কোর মারাক্কেশের কোলাহলপূর্ণ শহর থেকে অল্প দূরেই রয়েছে এক শান্ত, সবুজ উপত্যকা। জায়গাটির নাম হলো উরিকা ভ্যালি, যা প্রকৃতির এক অপূর্ব লীলাভূমি।

পাহাড়, নদী আর সবুজের সমারোহে ঘেরা এই উপত্যকা যেন শহরের ব্যস্ত জীবন থেকে পালিয়ে আসার এক আদর্শ ঠিকানা।

মারাক্কেশের কেন্দ্র থেকে খুব বেশি দূরে নয় এই উরিকা ভ্যালি। সেখানকার আবহাওয়াও বেশ মনোরম।

শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত জীবনের বাইরে, এখানে প্রকৃতির আসল রূপ উপভোগ করা যায়। পর্যটকদের কাছে এই স্থানটি দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে, যা তাদের দৈনন্দিন জীবনের একঘেয়েমি থেকে মুক্তি দেয়।

উরিকা ভ্যালির প্রধান আকর্ষণগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো এখানকার স্বচ্ছ জলধারা, যা আটলাস পর্বতমালা থেকে নেমে এসেছে।

এই নদীর পাশ দিয়ে হেঁটে গেলে দেখা যায় সবুজ গাছপালা আর নানা ধরনের ফুল। এখানকার স্থানীয় বার্বার সম্প্রদায়ের মানুষেরা তাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি ধরে রেখেছে, যা এই স্থানটিকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে।

বার্বাররা তাদের আতিথেয়তার জন্য সুপরিচিত, যা পর্যটকদের মন জয় করে।

এখানে আসা পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় একটি বিষয় হলো জাফরান চাষ। মরক্কোর এই “লাল সোনা” (saffron) অত্যন্ত মূল্যবান এবং এখানকার সংস্কৃতি ও অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

এখানকার বাজারে বিভিন্ন ধরনের মশলা ও ভেষজ পাওয়া যায়, যা রান্নার স্বাদ আরও বাড়িয়ে তোলে। এছাড়া, স্থানীয় বাজারে বিভিন্ন হস্তশিল্প ও ঐতিহ্যবাহী পোশাকও পাওয়া যায়।

ঐতিহাসিক দিক থেকেও উরিকা ভ্যালির গুরুত্ব রয়েছে।

একসময়, এখানকার ‘আঘমাত’ গ্রামটি ছিল এই অঞ্চলের রাজধানী। এখানকার প্রত্নতাত্ত্বিক খননকার্যের মাধ্যমে সেই প্রাচীন ইতিহাসের প্রমাণ পাওয়া যায়।

তবে, ২০২১ সালের ভয়াবহ ভূমিকম্পে এই অঞ্চলের কিছু ক্ষতি হয়েছে। স্থানীয়রা তাদের বাড়িঘর হারিয়েছিল, কিন্তু তারা দ্রুত ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং জীবনকে নতুন করে সাজিয়েছে।

তাদের এই ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প, তাদের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য এবং প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসাই উরিকা ভ্যালিকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে।

আপনি যদি প্রকৃতির কাছাকাছি, শান্ত ও সুন্দর একটি জায়গা খুঁজে বেড়াতে চান, তাহলে উরিকা ভ্যালি হতে পারে আপনার জন্য আদর্শ গন্তব্য।

তথ্যসূত্র: The Guardian

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *