মঙ্গল গ্রহে প্রথমবারের মতো মানুষের চোখে দৃশ্যমান অরোরা বা মেরুপ্রভা (aurora) আবিষ্কার করেছে নাসার পারসিভারেন্স (Perseverance) রোভার। এই আবিষ্কার মহাকাশ গবেষণার জগতে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক, যা ভবিষ্যতে মঙ্গল গ্রহে অভিযান চালানো নভোচারীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই আবিষ্কারের ফলে সৌরঝড় এবং মহাকাশের আবহাওয়া সম্পর্কে আরও ভালোভাবে জানা যাবে।
গত বছর, সূর্যের একটি শক্তিশালী সৌরঝড়ের কারণে মঙ্গলের আকাশে সবুজ রঙের আলো দেখা গিয়েছিল। বিজ্ঞানীরা জানান, এটি ছিল একটি “করোনাল মাস ইজেকশন”-এর ফল।
মার্চ মাসের সৌর শিখা থেকে নির্গত হওয়া প্লাজমা বা আয়নিত কণাগুলো মঙ্গলের দিকে ছুটে আসে এবং এর ফলেই এই আলোর সৃষ্টি হয়। এই ঘটনার তিন দিন আগেই বিজ্ঞানীরা এর পূর্বাভাস দিতে সক্ষম হয়েছিলেন, যা তাদের গবেষণা এবং পর্যবেক্ষণে সহায়তা করেছে।
এর আগে, মঙ্গলে যে অরোরাগুলো দেখা গিয়েছিল, তা কেবল অতিবেগুনি আলোকরশ্মিতে দৃশ্যমান ছিল। কিন্তু এবারকার ঘটনাটি মানুষের চোখে দৃশ্যমান, যা বিজ্ঞানীদের জন্য নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।
নরওয়ের অসলো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক এলিস রাইট নাটসেন এবং তাঁর দল এই বিষয়ে গবেষণা করেছেন। তাঁদের গবেষণা ‘সায়েন্স অ্যাডভান্সেস’ জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
গবেষকরা আরও জানিয়েছেন, যদিও ধূলিকণার কারণে এই আলোর উজ্জ্বলতা কিছুটা কম ছিল, তবে ভবিষ্যতে আরও ভালো পরিস্থিতিতে অথবা শক্তিশালী কণা নিঃসরণের ফলে হয়তো মানুষ খালি চোখেই এই দৃশ্য দেখতে পারবে।
উল্লেখ্য, এর আগে পৃথিবীর বাইরে অন্য কোনো গ্রহে মানুষের চোখে দৃশ্যমান অরোরার খবর পাওয়া যায়নি।
২০২০ সালে উৎক্ষেপণ করা পারসিভারেন্স ২০২১ সাল থেকে মঙ্গলের “জেzero ক্রেটার” -এ অনুসন্ধান চালাচ্ছে। এটি একসময় একটি হ্রদ এবং নদীর অববাহিকা ছিল বলে ধারণা করা হয়।
রোভারটি সেখানকার পাথর ও মাটির নমুনা সংগ্রহ করছে, যা ভবিষ্যতে পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনা হবে। এই নমুনাগুলো সম্ভবত প্রাচীন জীবনের চিহ্ন বহন করতে পারে।
এই আবিষ্কারগুলি মহাকাশ বিজ্ঞানীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যা ভবিষ্যতে সৌরজগৎ এবং পৃথিবীর বাইরের জগৎ সম্পর্কে আমাদের ধারণা আরও সমৃদ্ধ করবে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস