মার্ভেল সিনেমা: অপেক্ষার পালা কি শেষ?
সিনেমা হলে ছবি শেষ হওয়ার পরও সিটের উপর বসে থাকাটা বেশ পরিচিত একটা দৃশ্য, তাই না? বিশেষ করে মার্ভেল সিনেমার ক্ষেত্রে, যেখানে পর্দায় তারকাদের দৌরাত্ম্য শেষ হওয়ার পরেও কিছু অতিরিক্ত দৃশ্য (post-credit scene) দেখার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেন দর্শকরা।
কিন্তু এই দৃশ্যের আকর্ষণ কি আগের মতো আছে, নাকি সময়ের সাথে সাথে তা ফিকে হয়ে যাচ্ছে?
শুরুতে, মার্ভেলের এই কৌশল ছিল দারুণ আকর্ষণীয়। প্রত্যেকটা সিনেমার শেষে জুড়ে দেওয়া হতো এমন কিছু দৃশ্য, যা দর্শকদের মধ্যে তৈরি করতো পরবর্তী সিনেমা সম্পর্কে আগ্রহ। উদাহরণস্বরূপ, ২০১২ সালের ‘দ্য অ্যাভেঞ্জার্স’ সিনেমার শেষে থানোসের হাসি অথবা ২০১৭ সালের ‘স্পাইডার-ম্যান: হোমকামিং’-এ পিটার পার্কারের পরিচয় ফাঁস হওয়ার দৃশ্যগুলো এখনো দর্শকদের মনে গেঁথে আছে।
এই ধরনের দৃশ্যগুলো সিনেমার ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আভাস দিতো এবং দর্শকদের মধ্যে তৈরি করতো উন্মাদনা। মার্ভেল যেন এক সুসংহত সিনেমা জগৎ তৈরি করছিল, যেখানে প্রতিটি চরিত্র একে অপরের সঙ্গে জড়িত।
একসময়, এই কৌশল বেশ ভালো ফল দিয়েছিল। প্রতিটি নতুন দৃশ্যের মাধ্যমে দর্শকদের মধ্যে তৈরি হতো আলোচনা, জল্পনা এবং সিনেমাটি সম্পর্কে আরো বেশি আগ্রহ। তবে, সম্প্রতি এই দৃশ্যের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
২০২৩ সালের ‘ইটারনালস’-এর শেষে হ্যারি স্টাইলস এবং প্যাটান অসোয়াল্টের উপস্থিতি অথবা ‘থর: লাভ অ্যান্ড থান্ডার’-এ হারকিউলিসের আগমন—এসব দৃশ্য অনেকের কাছেই খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়নি। চরিত্রগুলোর ভবিষ্যৎ নিয়েও তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা।
এমনকি, ২০১৬ সালের ‘ডক্টর স্ট্রেঞ্জ’ সিনেমাতেও চিওয়েটেল ইজিওফরের চরিত্র মর্ডোর একটি সম্ভাব্য ভিলেন রূপে আবির্ভাবের আভাস ছিল। কিন্তু পরবর্তী সিনেমা ‘ডক্টর স্ট্রেঞ্জ ইন দ্য মাল্টিভার্স অফ ম্যাডনেস’-এ সেই চরিত্রটিকে সেভাবে দেখা যায়নি।
তাহলে, এখনো কেন আমরা শেষ দৃশ্যের জন্য অপেক্ষা করি? সম্ভবত, এখনো অনেকের মনে সেই পুরনো স্মৃতি কাজ করে। হয়তো এখনো সবাই চান, এমন একটা দৃশ্য দেখতে যা পুরো সিনেমা জগতের ভবিষ্যৎ পরিবর্তন করে দেবে।
যেমনটা ‘অ্যাভেঞ্জার্স: ইনফিনিটি ওয়ার’-এর শেষে নিক ফিউরির ক্যাপ্টেন মার্ভেলকে ডাকার দৃশ্যে দেখা গিয়েছিল। অথবা হয়তো, মার্ভেলের আসল জাদু হলো, আমাদের কোনো কারণ ছাড়াই সিনেমার শেষ পর্যন্ত বসিয়ে রাখা।
তবে, মার্ভেলের এই কৌশল কতদিন দর্শকদের ধরে রাখতে পারবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়। দর্শকদের মনে এখন একটাই প্রশ্ন, এই অপেক্ষার কি কোনো মানে আছে?
তথ্য সূত্র: The Guardian