সুপারহিরো জগৎে ত্রুটি? সেন্ট্রির আগমন কি মার্ভেলের ভুল?

মার্ভেল সিনেম্যাটিক ইউনিভার্স (MCU)-এ নতুন একটি চরিত্র, সেন্ট্রি-র আগমন নিয়ে বর্তমানে সিনেমাপ্রেমীদের মধ্যে বেশ আলোচনা চলছে। অতিমানবীয় শক্তিধর এই চরিত্রটি সম্ভবত *থান্ডারবোল্টস* ছবিতে আত্মপ্রকাশ করতে চলেছে।

তবে সেন্ট্রি-র ক্ষমতা এবং মানসিক অস্থিরতা নিয়ে অনেক প্রশ্নও উঠছে।

সেন্ট্রি-কে নিয়ে আলোচনার মূল কারণ হল, চরিত্রটির ক্ষমতা বিশাল। কমিক্সে তাকে “এক মিলিয়ন সূর্যের সমান শক্তি”-র অধিকারী হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।

কিন্তু এর পাশাপাশি, সেন্ট্রি–র রয়েছে গুরুতর মানসিক সমস্যা। তিনি সবসময় উদ্বেগ, মাদকাসক্তি এবং নিজের ভেতরের এক ধ্বংসাত্মক সত্তা ‘ভয়েড’-এর সঙ্গে লড়াই করেন।

‘ভয়েড’ আসলে তার ভেতরের সমস্ত খারাপ চিন্তা ও দুর্বলতার প্রতিচ্ছবি। একবার কল্পনা করুন, সুপারম্যান যদি প্রতিটা মিশনে আহত হতেন, সবকিছু ভুলে যেতেন, এবং মাঝে মাঝে শহর ধ্বংস করে দিতেন, তাহলে কেমন হতো?

সেন্ট্রি অনেকটা তেমনই।

সেন্ট্রি চরিত্রটি প্রথম আত্মপ্রকাশ করে ২০০০ সালে, কমিক্সে।

শুরুতে তাকে পুরনো দিনের এক সুপারহিরো হিসেবে দেখানো হয়েছিল, যাকে পরে মার্ভেলের ইতিহাসে ‘রিটকন’ করা হয়।

অর্থাৎ, গল্পের ধারাবাহিকতায় পরিবর্তন এনে, তার আগের অস্তিত্ব মুছে দেওয়া হয়, এমনকি তার নিজের স্মৃতি থেকেও।

এবার সেই চরিত্রকে নিয়ে আসা হচ্ছে *থান্ডারবোল্টস* ছবিতে।

প্রশ্ন হল, এত শক্তিশালী এবং একইসাথে মানসিক দিক থেকে দুর্বল একটি চরিত্রকে মার্ভেল-এর মতো বিশাল ক্যানভাসের সিনেমায় কিভাবে উপস্থাপন করা হবে?

অনেকেই মনে করছেন, সুপারহিরো সিনেমা নিয়ে দর্শকদের মধ্যে একটা ‘ক্লান্তি’ চলে এসেছে।

এমন পরিস্থিতিতে সেন্ট্রি-র মতো জটিল চরিত্র কতটা দর্শকপ্রিয়তা পাবে, তা একটা বড় প্রশ্ন।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সেন্ট্রি-কে সিনেমায় এমনভাবে উপস্থাপন করা হতে পারে, যাতে তার ক্ষমতা গল্পে ভারসাম্য বজায় রাখে।

কমিক্সেও এমনটা দেখা গেছে।

যেমন, ‘ওয়ার্ল্ড ওয়ার হাল্ক’ কমিক্সে হাল্কের সঙ্গে সেন্ট্রি-র লড়াই এতটাই তীব্র ছিল যে, সেন্ট্রিকে দুর্বল করে ফেলা হয়।

আবার ‘কিং ইন ব্ল্যাক’ কমিক্সেও তার ক্ষমতাকে সীমিত করা হয়েছিল।

তাহলে, *থান্ডারবোল্টস*-এর পরে, ২০২৬ ও ২০২৭ সালে মুক্তি পেতে যাওয়া অ্যাভেঞ্জার্স-এর দুটি সিনেমা— *ডুমসডে* এবং *সিক্রেট ওয়ার্স*-এ কি সেন্ট্রি-কে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে দেখা যাবে?

এমনও হতে পারে, সুপারহিরোদের অন্য জগৎ থেকে তুলে এনে ‘ব্যাটলওয়ার্ল্ড’-এ পাঠানোর পেছনেও হয়তো সেন্ট্রি-র হাত থাকবে।

যদিও কমিক্সে এই কাজটি করেছিলেন ‘বিয়ন্ডার’ এবং পরে ‘ডক্টর ডুম’।

সেন্ট্রি-র ক্ষমতা মার্ভেল সিনেমার ভবিষ্যৎকে নতুন দিকে মোড় দিতে পারে।

তবে, চরিত্রটির দুর্বলতা এবং ধ্বংসাত্মক দিকগুলো কিভাবে উপস্থাপন করা হবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

তথ্যসূত্র: The Guardian

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *