যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটসে একটি বৃদ্ধাশ্রমে অগ্নিকাণ্ডে নয়জনের মৃত্যু হয়েছে। ফলেরিভারের গ্যাব্রিয়েল হাউজ নামের এই বৃদ্ধাশ্রমে গত রবিবার রাতের এই আগুনে নিহতদের মধ্যে ছিলেন একজন সঙ্গীতশিল্পী, একজন সেক্রেটারি এবং সেনাবাহিনীর প্রাক্তন দক্ষ শুটার।
গ্যাব্রিয়েল হাউজ নামের এই সহায়তা কেন্দ্রে প্রায় একশ’ জনের থাকার ব্যবস্থা ছিল। ১৯৯৯ সালে এটি খোলা হয়েছিল। সেখানকার ছবিগুলোতে দেখা যায় পরিপাটি ঘর, কিন্তু পুরাতন কার্পেটিং ও আসবাবপত্র নজরে আসে। জানা গেছে, নিহতদের মধ্যে ৮৬ বছর বয়সী এলিনর উইলেট নামের এক বৃদ্ধা ছিলেন, যিনি ক্যাসিনোতে জুয়া খেলতে ভালোবাসতেন।
তার নাতনি জানান, এলিনরের এত বেশি আয় ছিল যে তিনি সরকারি স্বাস্থ্য বীমা সুবিধা পাওয়ার যোগ্য ছিলেন না, আবার বেশি দামের বৃদ্ধাশ্রমে থাকার মতো সামর্থ্যও তার ছিল না।
এলিনরের নাতনি হলি ম্যালোজ জানান, “আমার দিদা বলতেন, আমার থাকার জন্য একটা মাথা গোঁজার ঠাঁই আর সেলাই মেশিন রাখার জায়গা হলেই চলবে।” ম্যালোজ আরও জানান, তার দিদা ছিলেন খুবই ধার্মিক এবং ক্যাথলিক খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের অনুসারী।
আগুনে নিহতদের মধ্যে অন্যতম ৭২ বছর বয়সী কিম ম্যকিন ছিলেন একজন ভায়োলিন বাদক। বোস্টন এলাকার অর্কেস্ট্রাগুলোতে তিনি পারফর্ম করতেন।
তার ভাইপো অস্টিন ম্যকিন জানান, পরিবার থেকে তাকে অসাধারণ প্রতিভাবান হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, “কিম্মিকে আমরা খুব মিস করব। তিনি দয়ালু ছিলেন এবং খুব কম লোকই জানত যে তিনি একজন উজ্জ্বল সঙ্গীতজ্ঞ ছিলেন।”
কিম ম্যানহাটান স্কুল অফ মিউজিক থেকে বিশেষ বৃত্তি পেয়েছিলেন এবং গ্র্যাজুয়েশনের পর তিনি প্রথম সারির ভায়োলিন শিল্পী হিসেবে বিশ্বজুড়ে সফর করেছেন।
আরেকজন নিহত রিচার্ড রশঁন ছিলেন ৭৮ বছর বয়সী। তার ভাইঝি ব্রেনা সেস্তোদিও তাকে একজন শান্ত ও ভালো মানুষ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি জানান, রশঁন সেনাবাহিনীতে দক্ষ শুটার ছিলেন এবং তার ভাইঝি ও ভাইপোদের সঙ্গে দেখা করতে ভালোবাসতেন।
সেস্তোদিও জানান, রশঁন এক বছর আগে গ্যাব্রিয়েল হাউজে থাকতে শুরু করেন। তিনি এই বৃদ্ধাশ্রমটি সম্পর্কে খুব একটা ভালো ধারণা দিতে পারেননি। তার মতে, সবসময় ঘরটিতে গরম লেগে থাকত।
প্রতিবেশী দেশগুলোতে বয়স্ক নাগরিকদের দেখাশোনার ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা যায়। বাংলাদেশেও বয়স্ক মানুষের জন্য উপযুক্ত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস