বিজ্ঞানীদের চোখে ধরা দিল, পৃথিবীর কাছেই বিশাল এক মেঘ!

মহাকাশে আমাদের খুব কাছেই, বিজ্ঞানীরা এক বিশাল আণবিক মেঘের সন্ধান পেয়েছেন। এই মেঘের নাম দেওয়া হয়েছে ‘ইওস’। এটি পৃথিবী থেকে মাত্র ৩০০ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই আবিষ্কার নক্ষত্র এবং গ্রহ কীভাবে গঠিত হয়, সেই বিষয়ে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে।

সাধারণভাবে, মহাকাশে আণবিক মেঘগুলো গ্যাস এবং ধূলিকণা দিয়ে গঠিত হয়। এই মেঘের মধ্যে হাইড্রোজেন এবং কার্বন মনোক্সাইড অণু তৈরি হতে পারে।

এই মেঘের ঘন অংশে তরুণ নক্ষত্রের জন্ম হয়। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা সাধারণত রেডিও এবং ইনফ্রারেড তরঙ্গ ব্যবহার করে কার্বন মনোক্সাইডের উপস্থিতি শনাক্ত করার মাধ্যমে আণবিক মেঘ খুঁজে পান।

কিন্তু ‘ইওস’-এর ক্ষেত্রে বিষয়টি ভিন্ন ছিল। কারণ এতে কার্বন মনোক্সাইডের পরিমাণ কম ছিল।

তাই বিজ্ঞানীরা হাইড্রোজেন থেকে নির্গত অতিবেগুনি আলো শনাক্ত করার মাধ্যমে এই মেঘটি খুঁজে বের করেছেন।

লন্ডনের কুইন মেরি ইউনিভার্সিটির একজন জ্যোতিপদার্থবিদ, টমাস হার্থ বলেন, “আমরা এতদিন ধরে যা দেখিনি, তা আসলে আমাদের চোখের সামনেই ছিল। শুধুমাত্র ভিন্ন তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলো ব্যবহার করার কারণে আমরা এটি শনাক্ত করতে পেরেছি।”

এই আবিষ্কারের জন্য কোরীয় উপগ্রহ STSAT-1 এর একটি যন্ত্র, FIMS-SPEAR থেকে প্রাপ্ত ডেটা ব্যবহার করা হয়েছে।

এই ডেটা বিশ্লেষণ করে, বিজ্ঞানীরা দেখেন যে এই মেঘ থেকে অতিবেগুনি আলো নির্গত হচ্ছে।

রুজার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যা ও জ্যোতির্বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ব্লেকসলি বার্খার্ট বলেছেন, “আলোর এই বর্ণালী বিশ্লেষণ করে আমরা সরাসরি আণবিক হাইড্রোজেনের নির্গমন দেখতে পেয়েছি।

এই মেঘটি অন্ধকারে জ্বলছে।”

আণবিক মেঘ ‘ইওস’-এর কাছাকাছি অবস্থান, নক্ষত্র এবং সৌরজগতের গঠন সম্পর্কে গবেষণার এক দারুণ সুযোগ তৈরি করেছে।

বিজ্ঞানীরা এখন সরাসরি পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন কীভাবে আণবিক মেঘ গঠিত হচ্ছে এবং কীভাবে তারা নক্ষত্র ও গ্রহের জন্ম দেয়।

নেদারল্যান্ডসের লেইডেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক মেলিসা ম্যাকক্লিউর বলেন, “আমাদের সৌরজগতের কাছাকাছি এত বড় একটি মেঘ আগে কেন দেখা যায়নি, তা সত্যিই একটি বিস্ময়।”

বিজ্ঞানীদের মতে, এই আবিষ্কার মহাকাশ গবেষণায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

এর মাধ্যমে নক্ষত্র এবং গ্রহ কীভাবে গঠিত হয়, সে সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানা যাবে।

তথ্য সূত্র: CNN

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *