স্বাস্থ্য সচেতন মানুষের কাছে আজকাল ‘ম্যাচা’ বেশ পরিচিত একটি নাম। সবুজ চা-এর গুঁড়ো দিয়ে তৈরি এই পানীয় শুধু খেতেই সুস্বাদু নয়, এর রয়েছে অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা।
যারা স্বাস্থ্যকর খাবার এবং পানীয় পছন্দ করেন, তাদের জন্য ম্যাচা একটি দারুণ বিকল্প হতে পারে। বাজারে ম্যাচা পাউডার পাওয়া যায়, যা দিয়ে নানা ধরনের রেসিপি তৈরি করা সম্ভব।
চলুন, আজ আমরা ম্যাচা দিয়ে তৈরি হওয়া পাঁচটি ভিন্ন স্বাদের রেসিপি সম্পর্কে জানি।
প্রথমেই আসা যাক, খুবই সহজ একটি ম্যাচা ল্যাটের কথায়। মাত্র পাঁচ মিনিটে তৈরি করা যায় এই ল্যাটি।
এর জন্য আপনার দরকার হবে ম্যাচা পাউডার, সামান্য স্টিভিয়া (মিষ্টির জন্য), নারকেল তেল এবং দুধ।
প্রথমে একটি পাত্রে দুধ গরম করুন। এরপর ম্যাচা পাউডার, স্টিভিয়া ও নারকেল তেল মিশিয়ে ভালোভাবে ফেটিয়ে নিন।
গরম দুধের সাথে এই মিশ্রণ মিশিয়ে পরিবেশন করুন আপনার ম্যাচা ল্যাটি। স্বাস্থ্যকর এই পানীয় দিনের শুরুতেই আপনাকে দিতে পারে সতেজতা।
এরপর তৈরি করা যেতে পারে ম্যাচা গ্রিন টি শেক। এই শেক অন্যান্য পানীয়ের চেয়ে তুলনামূলকভাবে বেশি স্বাস্থ্যকর।
এটি বানানোর জন্য আপনার প্রয়োজন হবে ম্যাচা পাউডার, পছন্দের প্রোটিন পাউডার ও দুধ। স্বাদ বাড়ানোর জন্য এর সাথে কিছু ফল, যেমন— স্ট্রবেরি ও কলা যোগ করতে পারেন।
এক্ষেত্রে মিশ্রণটি ঘন করতে চাইলে, ফলগুলো ফ্রিজে কিছুক্ষণ রেখে দিন। এই শেক শরীরকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি যোগায় এবং দীর্ঘক্ষণ পেট ভরিয়ে রাখে।
ম্যাচা পুদিনা শেক-ও তৈরি করতে পারেন। এই শেকের প্রধান উপকরণগুলো হলো ম্যাচা, পুদিনা পাতা, পালং শাক, কলা, কাজুবাদাম, প্রোটিন পাউডার ও ভ্যানিলা এসেন্স।
কাজুবাদাম শরীরের মেটাবলিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে এবং অক্সিডেটিভ চাপ কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া, এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক।
যারা ঘন শেক পছন্দ করেন, তারা এক্ষেত্রে ফ্রিজে রাখা পালং শাক বা কলা ব্যবহার করতে পারেন।
যারা স্বাস্থ্যকর খাবার পছন্দ করেন, তাদের জন্য গ্রিন টি স্মুদি বাটি একটি চমৎকার বিকল্প। এই বাটিতে রয়েছে লাইম, অ্যাভোকাডো, পালং শাক এবং ম্যাচা পাউডার।
প্রতি সার্ভিংয়ে প্রায় ৯ গ্রাম ফাইবার এবং ১৭ গ্রামের বেশি প্রোটিন থাকে, যা আপনাকে সারাদিন কর্মক্ষম রাখতে সাহায্য করবে।
পালং শাকে বিদ্যমান বিটা-ক্যারোটিন হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, স্থূলতা এবং কিছু ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে। স্বাদ ও পুষ্টিগুণ বাড়াতে আপনি এই বাটিতে গ্রানোলা বা শুকনো ফল যোগ করতে পারেন।
দিনের যেকোনো সময় মুখরোচক খাবারের জন্য তৈরি করতে পারেন ম্যাচা সুপারফুড এনার্জি বাইটস। এই বাইটস তৈরি করতে প্রয়োজন— ম্যাচা পাউডার, পেকান বাদাম, খেজুর, নারকেল কুচি, নারকেল তেল এবং প্রোটিন পাউডার।
খেজুর ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ, যা দীর্ঘমেয়াদী রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। এই বাইটস সহজে বহনযোগ্য, তাই এটি আপনার ক্ষুধা নিবারণে দারুণ কাজে আসবে।
ম্যাচা দিয়ে তৈরি এই রেসিপিগুলো একদিকে যেমন সুস্বাদু, তেমনই স্বাস্থ্যকর। ম্যাচা শুধু পানীয় হিসেবেই নয়, শেক, স্মুদি বাটি এমনকি এনার্জি বাইটসের মতো বিভিন্ন খাবারেও ব্যবহার করা যায়।
সুতরাং, যারা স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রায় অভ্যস্ত, তারা ম্যাচার এই রেসিপিগুলো ট্রাই করতে পারেন।
সতর্কতা: কোনো নতুন খাদ্য গ্রহণ করার আগে অথবা খাদ্য তালিকায় পরিবর্তন আনার আগে অবশ্যই একজন পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিন।
তথ্য সূত্র: হেলথলাইন