যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পেশাদার ফুটবল কোচ ম্যাট ওয়েইসের বিরুদ্ধে কয়েক হাজার কলেজ ক্রীড়াবিদের ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও হাতিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্যে তাদের কম্পিউটার সিস্টেমে বেআইনিভাবে প্রবেশের অভিযোগ আনা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (গতকাল) ডেট্রয়েট ফেডারেল আদালতে তার বিরুদ্ধে এই অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।
অভিযোগ অনুযায়ী, ওয়েইস, যিনি আগে বাল্টিমোর রেভেন্সের হয়ে কাজ করেছেন এবং ২০২১ সালে মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ে সহকারী কোচের দায়িত্বে যোগ দেন, তিনি ১৪টি কম্পিউটার সিস্টেমে অবৈধ অনুপ্রবেশ এবং ১০টি পরিচয় চুরির অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ২০১৫ সাল থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ওয়েইস একটি তৃতীয় পক্ষের সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান, কেফার ডেভেলপমেন্ট সার্ভিসের মাধ্যমে পরিচালিত ১০০টির বেশি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেটাবেসে প্রবেশ করেন। এরপর তিনি ১ লাখ ৫০ হাজারের বেশি ক্রীড়াবিদের ব্যক্তিগত তথ্য ও চিকিৎসা সংক্রান্ত ডেটা ডাউনলোড করেন।
অভিযোগপত্রে ওয়েইসের প্রযুক্তিগত দক্ষতার বর্ণনা করে বলা হয়েছে, তিনি ইন্টারনেটে গবেষণা করে পাসওয়ার্ড সুরক্ষার এনক্রিপশন ভেঙে ফেলতেন। এর মাধ্যমে তিনি ২ হাজারের বেশি ক্রীড়াবিদ এবং ১ হাজার ৩০০ জনের বেশি শিক্ষার্থী বা প্রাক্তনীর সামাজিক মাধ্যম, ইমেইল এবং ক্লাউড স্টোরেজ অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করেন।
অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, ওয়েইস মূলত নারী কলেজ ক্রীড়াবিদদের লক্ষ্য করতেন। তিনি তাদের স্কুল, ক্রীড়া ইতিহাস এবং শারীরিক বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করে তাদের ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও সংগ্রহের চেষ্টা করতেন, যা তাদের অন্তরঙ্গ সঙ্গীর সঙ্গে শেয়ার করার উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছিল।
অভিযোগপত্রে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ওয়েইস ডাউনলোড করা ছবি ও ভিডিওর ওপর মন্তব্য লিখতেন এবং তাদের শারীরিক গঠন ও যৌন পছন্দ সম্পর্কে ব্যক্তিগত মন্তব্য রাখতেন। এমনকি, তিনি মাঝে মাঝে কয়েক বছর পর আবারও সেই অ্যাকাউন্টগুলোতে ফিরে আসতেন নতুন ছবি বা ভিডিওর জন্য।
ডেট্রয়েটের ভারপ্রাপ্ত মার্কিন অ্যাটর্নি জুলি বেক এক বিবৃতিতে জানান, “আমাদের অফিস নাগরিকদের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট রক্ষার জন্য কম্পিউটার হ্যাকিংয়ের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে।”
ওয়েইস দীর্ঘদিন ধরে (এক দশকের বেশি সময়) বাল্টিমোর রেভেন্সের সহকারী কোচ হিসেবে কাজ করেছেন। প্রধান কোচ ছিলেন জন হারবাও। এরপর তিনি হারবাওয়ের ভাই জিম হারবাওয়ের অধীনে মিশিগানে যোগ দেন।
গত দুই বছর ধরেই ওয়েইস কর্তৃপক্ষের নজরে ছিলেন। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে তার অ্যান আর্বারের বাড়িতে পুলিশ তল্লাশি চালায়। এরপর তাকে বরখাস্ত করা হয়। সে সময় ওয়েইস বলেছিলেন, তিনি তদন্তে সহযোগিতা করছেন এবং দ্রুত এই ঘটনার সমাধান হবে বলে আশা করছেন।
আদালতে ওয়েইসের প্রথম শুনানির তারিখ এখনো নির্ধারিত হয়নি।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস