সামরিক বাহিনীতে কাটছাঁট, ইসরায়েলের হামলা, স্বাস্থ্যখাতে মামলা—বিশ্বজুড়ে আলোচনার ঝড়।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গত কয়েক দিনে ঘটেছে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা, যা বিভিন্ন দেশের রাজনৈতিক এবং সামাজিক পরিস্থিতিকে প্রভাবিত করেছে। নিচে সেগুলোর সংক্ষিপ্ত বিবরণ তুলে ধরা হলো:
মার্কিন সামরিক বাহিনীতে শীর্ষ পদে কাটছাঁট: মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের প্রধান, সেক্রেটারি অফ ডিফেন্স, সম্প্রতি সেনাবাহিনীর শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের সংখ্যা কমানোর নির্দেশ দিয়েছেন। পেন্টাগনের নির্দেশনা অনুযায়ী, অন্তত ২০ শতাংশ জেনারেল ও অ্যাডমিরাল পদ হ্রাস করা হবে।
এছাড়াও, ন্যাশনাল গার্ডের জেনারেল অফিসারদের সংখ্যাও ২০ শতাংশ কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। খবর অনুযায়ী, সামগ্রিকভাবে সশস্ত্র বাহিনীর জেনারেল এবং ফ্ল্যাগ অফিসারের সংখ্যা ১০ শতাংশ কমানো হবে।
জানা গেছে, এর আগে ফেব্রুয়ারিতে জয়েন্ট চিফস অফ স্টাফের চেয়ারম্যান এবং নৌবাহিনীর প্রধানকে বরখাস্ত করা হয়েছিল।
ইসরায়েলের ইয়েমেনে বিমান হামলা: গত কয়েক দিনে ইসরায়েল এবং ইয়েমেনের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে। একটি সূত্র জানাচ্ছে, গত রবিবার হুতি বিদ্রোহীরা তেল আবিবের কাছে একটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে।
এরপর এর প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েল ইয়েমেনে বিমান হামলা চালিয়েছে। হুতি কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, গাজায় ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলের “গণহত্যা”র প্রতিবাদে তারা এই ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে।
যদিও ক্ষেপণাস্ত্রটি লক্ষ্য ভেদ করতে পারেনি, তবে এটি ছিল দেশটির আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছাকাছি, যা দেশটির অন্যতম সুরক্ষিত এলাকা হিসেবে পরিচিত। হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলি বিমান বাহিনী ইয়েমেনের হুদাইদাহ এবং আশেপাশের অঞ্চলে হামলা চালায়।
এতে অন্তত একজন নিহত এবং ৩৫ জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য ও মানবসেবা বিভাগে মামলা: ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য ও মানবসেবা বিভাগের (Department of Health and Human Services – HHS) পুনর্গঠন নিয়ে নতুন একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
১৯টি রাজ্য এবং ওয়াশিংটন ডিসির ডেমোক্রেটিক অ্যাটর্নি জেনারেল-এর পক্ষ থেকে এই মামলা করা হয়েছে। মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, হাজার হাজার ফেডারেল স্বাস্থ্যকর্মীকে বরখাস্ত করা এবং বেশ কয়েকটি স্বাস্থ্য বিষয়ক কর্মসূচি বন্ধ করে জনস্বাস্থ্যকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলা হয়েছে।
রাজ্যগুলো বরখাস্তের ওপর স্থগিতাদেশ চেয়ে এবং কর্মসূচিগুলো পুনর্বহাল করার আবেদন জানিয়েছে। নিউ ইয়র্ক রাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল লেটিটিয়া জেমস এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, “এইচএইচএস জনস্বাস্থ্য রক্ষার জন্য দায়ী। কিন্তু এই প্রশাসন কোনো কারণ ছাড়াই বিজ্ঞানী ও গবেষকদের বরখাস্ত করেছে, পরীক্ষাগার বন্ধ করে দিয়েছে এবং জীবন রক্ষাকারী কর্মসূচিগুলো বাতিল করেছে।”
যদিও এইচএইচএস-এর একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, ট্রাম্প প্রশাসন আইন মেনেই কাজ করছে এবং তারা কেবল সংস্থাটিকে শক্তিশালী করতে সংস্কার করছে।
আবহাওয়া বিষয়ক রাডার নিয়ে বিতর্ক: যুক্তরাষ্ট্রের আবহাওয়া দপ্তর (National Weather Service) একটি চরমপন্থী গোষ্ঠীর কাছ থেকে হুমকির সম্মুখীন হয়েছে। ওই গোষ্ঠীটি ডপলার রাডারকে “আবহাওয়া অস্ত্র” হিসেবে বিবেচনা করে।
অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গেছে, ‘ভেটেরান্স অন পেট্রোল’ নামক এই সংগঠনটি আবহাওয়া রাডার স্টেশনগুলোতে “অনুপ্রবেশের মহড়া” চালানোর আহ্বান জানিয়েছে, যাতে দুর্বলতা খুঁজে বের করা যায় এবং শেষ পর্যন্ত স্টেশনগুলো ধ্বংস করা যায়।
আবহাওয়াবিদ, ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) এবং বিমান বাহিনী নেক্সট জেনারেশন ওয়েদার রাডার সিস্টেম (নেক্সরাড) ব্যবহার করে, যা বৃষ্টিপাত এবং বাতাসের গতিবিধি শনাক্ত করতে পারে।
এই রাডারগুলো টর্নেডো এবং তীব্র ঝড়ের পূর্বাভাস দিতে সহায়ক।
এছাড়াও, সম্প্রতি কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।
তথ্য সূত্র: সিএনএন