আতঙ্ক! মায়া সভ্যতার গোপন রহস্য উন্মোচন, স্তম্ভিত বিশ্ব!

প্রায় ৩,০০০ বছর পুরনো মায়ান সভ্যতার এক বিশাল স্থাপত্যের সন্ধান পাওয়া গেছে গুয়াতেমালায়। সম্প্রতি প্রত্নতত্ত্ববিদদের একটি দল দেশটির উত্তরাঞ্চলে, বিশেষ করে উয়াক্সাকটুন (Uaxactún) এলাকার কাছে এই গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার করেছেন।

এখানে মন্দির, পিরামিড এবং এক বিশেষ ধরনের জলনিকাশি ব্যবস্থার সন্ধান পাওয়া গেছে, যা প্রাচীন মায়ান সভ্যতার ইতিহাস সম্পর্কে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে।

গুয়াতেমালার সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই বিশাল কমপ্লেক্সটি তিনটি স্থানে বিস্তৃত— লস আবুয়েলোস, পেটান এবং ক্যাম্ব্রায়াল। মায়ান সভ্যতা, যা খ্রিস্টপূর্ব ২০০০ অব্দে যাত্রা শুরু করে এবং ৪০০ থেকে ৯০০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত উন্নতির শিখরে পৌঁছেছিল, সেই সময়ের মানুষের তৈরি বিভিন্ন স্থাপত্য, যেমন মন্দির, রাস্তা, পিরামিড এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন এখানে পাওয়া গেছে।

লস আবুয়েলোস (Los Abuelos), যার অর্থ “ঠাকুরদাদা”, উয়াক্সাকটুন থেকে প্রায় ২১ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এখানে পাথরের তৈরি দুটি মূর্তি পাওয়া গেছে, যা সম্ভবত আদিপুরুষদের প্রতীক।

এই স্থানে পাওয়া পবিত্র স্থানগুলো মায়ানদের ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। গুয়াতেমালার সংস্কৃতি ও ক্রীড়া বিষয়ক উপমন্ত্রী লুইস রড্রিগো কারিও এই আবিষ্কারের গুরুত্ব তুলে ধরেছেন।

পেটান-এ (Petnal) পাওয়া গেছে ৩৩ মিটার উঁচু একটি পিরামিড। এর চূড়ায় দুটি কক্ষে প্রাচীনকালের নানা চিত্রকর্ম ও প্রতীক খোদাই করা রয়েছে।

অন্যদিকে, লস আবুয়েলোস থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরে ক্যাম্ব্রায়ালে (Cambrayal) একটি প্রাসাদের ভেতরে “অনন্য” জলনিকাশি ব্যবস্থার সন্ধান পাওয়া গেছে। প্রত্নতত্ত্ববিদদের মতে, এই আবিষ্কার মায়ান সংস্কৃতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

এই আবিষ্কারের সঙ্গে জড়িত ছিলেন গুয়াতেমালা ও স্লোভাকিয়ার প্রত্নতত্ত্ববিদ এবং আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা। তারা ‘উয়াক্সাকটুন আঞ্চলিক প্রত্নতাত্ত্বিক প্রকল্প’ (Uaxactún Regional Archaeological Project) -এর অধীনে গবেষণা চালাচ্ছিলেন এবং স্লোভাকিয়ার ব্রাতিস্লাভার কমেনিয়াস বিশ্ববিদ্যালয়ের (Comenius University in Bratislava) সহায়তা নিয়েছেন।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, উন্নত প্রযুক্তি ও নতুন গবেষণার ফলে মায়ান সভ্যতার আরও অনেক অজানা দিক উন্মোচিত হচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, সম্প্রতি টিকাল (Tikal) নামক স্থানে ১,৭০০ বছর পুরনো একটি বেদীর সন্ধান পাওয়া গেছে, যেখানে মানুষের কঙ্কাল পাওয়া গেছে।

যদিও এটি মায়ান সভ্যতার ধ্বংসাবশেষের মধ্যে পাওয়া গেছে, তবে ধারণা করা হয়, এটি মায়ানরা তৈরি করেনি, বরং তেওতিহুয়াকান (Teotihuacan) থেকে আসা শিল্পীরা এটি তৈরি করেছিলেন।

ঐতিহাসিক নিদর্শন অনুসন্ধানে বাংলাদেশের প্রত্নতত্ত্ববিদরাও উল্লেখযোগ্য কাজ করছেন। পাহাড়পুর, ময়নামতি সহ বিভিন্ন স্থানে পাওয়া প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন আমাদের দেশের সমৃদ্ধ ইতিহাসকে তুলে ধরে।

গুয়াতেমালার এই নতুন আবিষ্কার, প্রাচীন সভ্যতার রহস্য উন্মোচনে প্রত্নতত্ত্বের গুরুত্ব আরও একবার প্রমাণ করে।

তথ্য সূত্র: আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *