ছোট্ট একটি ক্যারিবিয়ান দ্বীপ, যেখানে প্রকৃতির নীরবতা আর বিলাসবহুল জীবন একসাথে মিলেমিশে এক অসাধারণ গন্তব্য তৈরি করেছে। সেন্ট ভিনসেন্ট ও গ্রেনাডাইন দ্বীপপুঞ্জের (Saint Vincent and the Grenadines) অন্তর্ভুক্ত, মায়ারো (Mayreau) নামের এই দ্বীপটি যেন এক লুকানো স্বর্গ। এখানকার শান্ত পরিবেশ আর অসাধারণ দৃশ্য যেকোনো ভ্রমণকারীর মন জয় করে নেয়।
প্রায় ৩০০ জন মানুষের বসবাস এই মায়ারোতে। এখানকার জীবনযাত্রা খুবই সাধারণ, কোলাহলমুক্ত। তবে এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায়।
স্বচ্ছ নীল জলরাশি আর সাদা বালুকাময় সৈকত, যা পর্যটকদের কাছে এক দারুণ আকর্ষণ। এখানকার প্রধান আকর্ষণগুলো হলো টোব্যাগো কেইস মেরিন পার্ক (Tobago Cays Marine Park), যেখানে সমুদ্রের গভীরে বিভিন্ন প্রকার প্রবালের (coral) সমাহার দেখা যায়।
এছাড়া, এখানে কচ্ছপের সঙ্গে সাঁতার কাটারও সুযোগ রয়েছে।
মায়ারোর উত্তরে অবস্থিত সল্ট হুইসল বে (Salt Whistle Bay), যা শান্ত ও সুরক্ষিত একটি জায়গা। এখানে বিভিন্ন বিচ বার (beach bar) ও রেস্টুরেন্টগুলোতে বসে স্থানীয় খাবারের স্বাদ নেওয়া যেতে পারে।
যারা ডুব দিতে ভালোবাসেন, তাদের জন্য মায়ারো গার্ডেনস (Mayreau Gardens) অপেক্ষা করছে, যেখানে নানা রঙের প্রবাল আর সামুদ্রিক জীবের (marine life) দেখা পাওয়া যায়।
এই দ্বীপে ভ্রমণ করার সেরা সময় হলো ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত। এই সময়ে আবহাওয়া বেশ মনোরম থাকে, যা সমুদ্র এবং সৈকত উপভোগের জন্য আদর্শ।
মায়ারোতে যাওয়ার উপায়? সেন্ট ভিনসেন্টের (St. Vincent) আর্গাইল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে (Argyle International Airport) পৌঁছে, নৌকায় করে এখানে আসা যেতে পারে। অথবা, কাছাকাছি অবস্থিত ক্যানোয়ান (Canouan) অথবা ইউনিয়ন আইল্যান্ডে (Union Island) বিমানে যাওয়া যায়, সেখান থেকেও নৌকায় করে মায়ারোতে যাওয়া যায়।
এখানে থাকার জন্য কয়েকটি সুন্দর রিসোর্ট (resort) ও ভিলা (villa) রয়েছে, যেখানে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যায়। মায়ারো বিচ ক্লাব ও ভিলাস (Mayreau Beach Club & Villas) এর মধ্যে অন্যতম, যা শান্ত একটি উপসাগরের পাশে অবস্থিত।
এখানে একটি আকর্ষণীয় সুইমিং পুল (swimming pool) ও রেস্টুরেন্টও (restaurant) রয়েছে।
দ্বীপের স্থানীয় সংস্কৃতি ও খাবারের স্বাদও অসাধারণ। এখানকার রেস্টুরেন্টগুলোতে তাজা সি-ফুড (sea food) পাওয়া যায়।
যেমন, কারি করা শামুক (conch), বারবিকিউ করা মাংস, গ্রিল করা লবস্টার (lobster) ইত্যাদি।
আবহাওয়ার কারণে মাঝে মাঝে এখানে প্রাকৃতিক দুর্যোগও (natural disaster) দেখা যায়। যেমন, ২০২৩ সালে ঘূর্ণিঝড় বেরিলের (Hurricane Beryl) আঘাতে দ্বীপের অনেক ক্ষতি হয়েছিল, তবে বর্তমানে এখানকার স্থানীয়রা ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে এবং দ্বীপটিকে আগের রূপে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে।
নতুন করে ঘরবাড়ি তৈরি হচ্ছে এবং পর্যটকদের থাকার জন্য নতুন ভিলাও তৈরি হচ্ছে।
মায়ারো, কোলাহলমুক্ত জীবন এবং প্রকৃতির কাছাকাছি থাকতে যারা ভালোবাসেন, তাদের জন্য একটি অসাধারণ গন্তব্য হতে পারে।
তথ্য সূত্র: ট্রাভেল অ্যান্ড লিজার (Travel and Leisure)