আতঙ্কের খবর! দ্রুত বাড়ছে হামের সংক্রমণ, শিশুদের সুরক্ষায় করণীয়?

শিরোনাম: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে হামের প্রাদুর্ভাব: বাংলাদেশের জন্য সচেতনতার প্রয়োজনীয়তা

বিশ্বজুড়ে হাম রোগের প্রাদুর্ভাব আবারও উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সম্প্রতি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে হামের সংক্রমণ উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সংস্থাগুলোর নজরে এসেছে। এই পরিস্থিতিতে, বাংলাদেশের জনগণের জন্য এই রোগ সম্পর্কে সচেতনতা এবং প্রতিরোধের ব্যবস্থা গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের মতে, এপ্রিল মাসের শেষ নাগাদ ২৯টি রাজ্যে ৮৮৪ জনেরও বেশি হাম রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। এটি গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি, যেখানে পুরো বছরে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল মাত্র ২৮৫ জন। আক্রান্তদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক হলো শিশু এবং তরুণ প্রাপ্তবয়স্ক। উদ্বেগের বিষয় হলো, আক্রান্তদের মধ্যে ৯৭ শতাংশের বেশি হয় টিকা নেয়নি, অথবা তাদের টিকা দেওয়ার প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হাম অত্যন্ত সংক্রামক একটি রোগ। আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি-কাশির মাধ্যমে এই রোগ দ্রুত ছড়াতে পারে। হামের প্রাথমিক লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে জ্বর, কাশি, নাক দিয়ে পানি পড়া, এবং শরীরে ফুসকুড়ি ওঠা। কিছু ক্ষেত্রে, হামের কারণে মারাত্মক জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে, যেমন নিউমোনিয়া বা মস্তিষ্কের প্রদাহ (এনসেফেলাইটিস)।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-এর তথ্য অনুযায়ী, ইউরোপ ও মধ্য এশিয়ার দেশগুলোতেও হামের প্রাদুর্ভাব বেড়েছে। সেখানে ২০২১ সালের তুলনায় ২০২২ সালে আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (CDC) দেশটির বাসিন্দাদের জন্য বিশেষ পরামর্শ জারি করেছে। CDC-এর পক্ষ থেকে স্বাস্থ্যকর্মীদের হাম, মাম্পস এবং রুবেলা (MMR) ভ্যাকসিন-এর গুরুত্ব বোঝানোর কথা বলা হয়েছে, বিশেষ করে যারা এখনো এই টিকা গ্রহণ করেননি তাদের জন্য। ভ্রমণের আগে অবশ্যই এই টিকা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে, হাম প্রতিরোধে টিকাদান কর্মসূচির গুরুত্ব অপরিসীম। সরকার নিয়মিত টিকাদান কর্মসূচি পরিচালনা করে থাকে, যার মাধ্যমে শিশুদের হাম রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হয়। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, শিশুদের সঠিক সময়ে এই টিকা দেওয়া হলে হাম থেকে তাদের রক্ষা করা সম্ভব।

সুতরাং, বাংলাদেশের প্রত্যেক নাগরিকের উচিত হাম রোগ সম্পর্কে সচেতন হওয়া এবং প্রতিরোধের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা। আপনার সন্তানকে অবশ্যই সঠিক সময়ে হামের টিকা দিন। কোনো উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যোগাযোগ করুন এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। মনে রাখতে হবে, সচেতনতাই পারে আমাদের সুস্থ রাখতে।

তথ্য সূত্র: আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সংস্থা ও সংবাদ প্রতিবেদন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *