মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে হাম রোগের প্রাদুর্ভাব: শিশুদের সুরক্ষায় জরুরি পদক্ষেপের আহ্বান।
যুক্তরাষ্ট্রে হাম রোগের প্রকোপ বাড়ছে, যা শিশুদের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে। টেক্সাস, নিউ মেক্সিকো, ওকলাহোমা সহ বিভিন্ন রাজ্যে দ্রুত এই রোগ ছড়িয়ে পড়ছে।
এর কারণ হিসেবে টিকাকরণের হার কমে যাওয়া এবং ভুল তথ্য প্রচারকে দায়ী করা হচ্ছে। হাওয়াই রাজ্যের গভর্নর ড. জশ গ্রিন, যিনি একসময় ইমার্জেন্সি রুমের চিকিৎসক ছিলেন, শিশুদের সুরক্ষায় দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জোরালো আহ্বান জানিয়েছেন।
হাম একটি অতি সংক্রামক রোগ, যা আক্রান্তদের মধ্যে অনেকেরই হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন হয়। প্রতি ১০০০ জনের মধ্যে ১ জন এই রোগে মারা যায়।
ভ্যাকসিন আবিষ্কারের আগে প্রতি বছর এই রোগে বহু মানুষ আক্রান্ত হতো। গুরুতর অসুস্থতা এবং মৃত্যুর ঘটনাও ছিল অনেক।
বর্তমানে, টিকাকরণের হার কমে যাওয়ার কারণে রোগটি আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, হাম নির্মূলের প্রচেষ্টা আবারও ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি)-এর তথ্য অনুযায়ী, ১৪টি রাজ্যে কিন্ডারগার্টেন শিশুদের মধ্যে হামের টিকাকরণের হার ৯০ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে, যা খুবই উদ্বেগজনক।
হার্ড ইমিউনিটি বজায় রাখতে হলে সাধারণত ৯৫ শতাংশ টিকাকরণের প্রয়োজন।
টিকাকরণের বিরুদ্ধে ভুল তথ্য প্রচারের কারণে অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানদের টিকা দিতে দ্বিধা বোধ করছেন। এই ভুল তথ্যের কারণে রোগের বিস্তার আরও বাড়ছে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হামের ভ্যাকসিন সম্পূর্ণ নিরাপদ এবং এটি শিশুদের জীবন বাঁচানোর অন্যতম প্রধান উপায়।
গভর্নর গ্রিন জোর দিয়ে বলেন, টিকা নেওয়া কেবল ব্যক্তিগত পছন্দ নয়, বরং এটি আমাদের সকলের সম্মিলিত দায়িত্ব। এটি সমাজের দুর্বল জনগোষ্ঠীকে রক্ষা করার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায়।
তিনি স্বাস্থ্য ও মানব সেবা বিভাগকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে এবং একটি ব্যাপক টিকাদান কর্মসূচি শুরু করার আহ্বান জানিয়েছেন। এই কর্মসূচির মূল ভিত্তি হবে শিক্ষা, কমিউনিটি অংশগ্রহণ, সহজলভ্যতা এবং সঠিক সরকারি নীতি গ্রহণ।
টিকাদান কর্মসূচি সফল করতে হলে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা, কমিউনিটিকে সক্রিয়ভাবে যুক্ত করা এবং টিকা সহজলভ্য করা অপরিহার্য।
গ্রিন উল্লেখ করেন, যারা স্বাস্থ্যসেবা থেকে দূরে, তাদের জন্য ভ্রাম্যমাণ টিকাদান কেন্দ্র, স্বাস্থ্য মেলা এবং স্থানীয় সংস্থাগুলোর সঙ্গে অংশীদারিত্বের মাধ্যমে টিকা সহজলভ্য করা যেতে পারে।
আমরা সবাই মিলে শিশুদের হাম থেকে বাঁচাতে পারি। দ্রুত টিকাদান কর্মসূচি শুরু করা গেলে এই রোগ বিস্তার রোধ করা সম্ভব।
আমাদের হাতে তথ্য আছে, সম্পদ আছে। এখন প্রয়োজন সহানুভূতি, সাহস এবং সঠিক পদক্ষেপ নেওয়ার মানসিকতা।
বাংলাদেশেও শিশুদের টিকাকরণের গুরুত্ব অপরিসীম। হাম রোগ প্রতিরোধে শিশুদের টিকা দেওয়া উচিত।
স্বাস্থ্যকর্মীদের পরামর্শ মেনে শিশুদের রোগমুক্ত রাখতে অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন